বিদেশে ব্যাপক চাহিদা, দামোদরের চরের আগাছা ফুল বিক্রি করেই চলছে দুর্গাপুরের ১০০ পরিবারের জীবিকা!

একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে, ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না’—দামোদর নদের চরে জন্মানো ফুলগুলিরও যেন প্রথম দিকে সেই অবস্থাই ছিল। এখানকার কেউ ফিরেও দেখে না যে আগাছা, সেই সর, কাশ, হোগলা ও নল গাছের ফুলগুলিই এখন সুসজ্জিত করছে ইউরোপ ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলির ড্রইংরুম।এই অভিনব শুকনো ফুলের ব্যবসা করেই বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আশিস নগরের প্রায় ১০০টি পরিবার জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে।আন্তর্জাতিক বাজারে শুকনো ফুলের চাহিদাআন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় তিন দশক ধরে শুকনো ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত থেকে আমেরিকা, ইউরোপ, জার্মান, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও জাপান-সহ প্রায় ২০টি দেশে প্রায় ৫০০ প্রজাতির শুকনো ফুল রফতানি করা হয়।সংগ্রহ ও শুকানো: শিল্পাঞ্চলে দামোদর নদের পাড়ে বসবাসকারী এই পরিবারগুলি সারাবছর নৌকায় করে চরের ঘন জঙ্গল থেকে সর, কাশ, হোগলা ও নল গাছের ফুল ও কাঠি সংগ্রহ করে এবং তা রোদে শুকিয়ে নেয়।বিদেশে রফতানি: এই শুকনো ফুলগুলি স্থানীয় ব্যবসায়ীর হাত ঘুরে জয়নগরের একটি কারখানায় রংবেরঙের করে তোলা হয়। এরপর কলকাতার রফতানি সংস্থাগুলি তা কিনে চড়া দামে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও জার্মান-সহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করে।কলকাতার একটি রফতানি সংস্থার কর্ণধার রাজীব আগরওয়াল জানিয়েছেন, নভেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই ফুলগুলি পাওয়া যায়।পরিবারের আয়নদীর চরের এই আগাছা থেকেই স্থানীয় পরিবারগুলি ভালো আয় করছে:পণ্যের নামপরিমাণআয়নল, কাশ ও সর ফুল১০০০ ফুল পিছুপ্রায় ৬০০ টাকাহোগলা ফুল১০০০ ফুল পিছু২০০ টাকানল ও সর কাঠি১টি কাঠি পিছু৬০ পয়সাস্থানীয়দের কাছে সামান্য মূল্যে সংগৃহীত এই প্রাকৃতিক পণ্যগুলিই বিদেশে বহু গুণে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, যা দুর্গাপুরের প্রায় ১০০টি পরিবারের জীবিকার প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy