বাবরি মসজিদ বিতর্কে সাসপেন্ড হলেও অনড় হুমায়ুন কবীর! ‘শিলান্যাস হবেই’, প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়কের

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরও নিজের অবস্থানে অনড় ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রেজিনগরের মরাদিঘির মাঠে প্রস্তাবিত ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস কর্মসূচি থেকে তিনি একচুলও সরছেন না। বরং প্রশাসন অনুমতি না-দিলেও তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল কংগ্রেস। তার কারণ, বেশ কয়েকমাস ধরেই মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ তৈরির কথা বলে আসছেন তিনি এবং চলতি মাসের ৬ ডিসেম্বর শিলান্যাস করার ঘোষণা দেন। এই নিয়েই তাঁর সঙ্গে দলের বিরোধ তৈরি হয়েছিল।

শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হুমায়ুন কবীর জানান, শনিবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। সেখানে কেবল ধর্মীয় আলোচনা হবে, কোনও রাজনৈতিক ভাষণ বা কুৎসা হবে না। তিনি বলেন, “অনুমতি দিক বা না-দিক, আমি ওসি রেজিনগর এবং আইসি বেলডাঙাকে মেল করে জানিয়েছি। প্রশাসন যদি হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে পারে, তবে আমার মসজিদের শিলান্যাসে কেন বাধা দেবে?”

হুমায়ুনের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি, অনুমতি না-মিললেও কর্মসূচি হবেই। এর ফলে যদি জাতীয় সড়ক (NH-34) অবরুদ্ধ হয় বা যানজটের সৃষ্টি হয়, তার দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।

বিধায়ক পদ ছাড়ছেন হুমায়ুন! হুমায়ুন কবীর আরও জানান যে তিনি আগামী ১৭ জানুয়ারি বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের পর অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, “তৃণমূল আমাকে অপমান করেছে। আমি বাবরি মসজিদ করব বলেছি বলে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এর খেসারত তৃণমূলকে দিতে হবে। ২০২৬ সালের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ‘প্রাক্তন’ হয়ে যাবে।”

এদিকে, শিলান্যাস অনুষ্ঠান আটকাতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে হুমায়ুন জানান, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কোনও অসাংবিধানিক কাজ করছেন না। তিনি বলেন, “যদি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকে যে বাবরি মসজিদ করা যাবে না, তবেই আমি সরব। অন্যথায় কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।” পরে জানা যায় যে আদালতও এই মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে কোনও আপত্তি জানায়নি। বরং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যকে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনে রাজ্যকে সহযোগিতা করতেও নির্দেশ দিয়েছে।

আদালতের নির্দেশের পর শনিবারের অনুষ্ঠান ঘিরে এখন থেকেই রেজিনগরে সাজসাজ রব। হুমায়ুন কবীরের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন এবং তিনি নিজে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মাঠে উপস্থিত থাকবেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy