দীর্ঘ নয় মাস বেতনহীন অবস্থায় কাটানোর পর, পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে রাজপথে নামলেন রাজ্যের কয়েক হাজার শিক্ষাকর্মী। সোমবার করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দেন তাঁরা। গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদের এই কর্মীদের দাবি— অবিলম্বে তাঁদের কাজে ফিরিয়ে বেতন চালু করতে হবে। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি সেন্ট্রাল পার্কের সামনে পৌঁছালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেখানেই রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা।
এদিনের মিছিলে উঠে আসে একের পর এক মর্মান্তিক কাহিনী। গ্রুপ-ডি কর্মী আনন্দ গায়েন স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মিছিলে সামিল হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, ৭৫ বছরের বৃদ্ধ বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন, অর্থের অভাবে মেয়ের পড়াশোনা ও স্ত্রীর চিকিৎসা বন্ধ। অন্যদিকে সোমা রায়ের মতো কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, সমস্ত নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়েও কেন এক লহমায় তাঁদের জীবন অন্ধকার হয়ে গেল?
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষকদের মেয়াদ কিছুটা বাড়লেও, ৩ এপ্রিলের পর থেকে শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে ব্রাত্য। এর ফলে স্কুলগুলির প্রশাসনিক কাজ লাটে উঠেছে। মিছিলে যোগ দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান শিক্ষকরাও। তাঁদের দাবি, শিক্ষাকর্মী ছাড়া ভর্তি প্রক্রিয়া বা রেজাল্ট তৈরির কাজ চালানো অসম্ভব। যোগ্য হওয়ার পরেও কেন তাঁদের এই চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে হবে, সেই প্রশ্নই এখন প্রশাসনের দরজায় আছড়ে পড়ছে।