রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফরকে ঘিরে বৃহস্পতিবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সুর চড়ালেন। তাঁর অভিযোগ, বিদেশি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিরোধী নেতৃত্বের আলোচনার যে দীর্ঘদিনের সংসদীয় রীতি ছিল, বর্তমান সরকার ইচ্ছে করে সেটি ভেঙে দিচ্ছে।
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ:
সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে রাহুল গান্ধী প্রথা ভাঙার অভিযোগ তোলেন:
প্রথা ভাঙার অভিযোগ: তিনি বলেন, “বাজপেয়ীজি থেকে শুরু করে মনমোহন সিংয়ের সময়েও এই প্রথা ছিল। বিদেশি নেতারা এলে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করতেন। আজকাল সরকারই বিদেশি অতিথিদের বলে দেয় – বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করবেন না। অথচ আমরাও ভারতের প্রতিনিধি।”
‘আতঙ্কের রাজনীতি’: রাহুল দাবি করেন, বিদেশ মন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’জনেই একপ্রকার চাপ তৈরি করেন যাতে অতিথিরা বিরোধী শিবিরের সঙ্গে দেখা না করেন। তাঁর কথায়, “এটা আতঙ্কের রাজনীতি, তারা চায় না যে ভারতের বিষয়ে আমাদের অন্য মতামত কেউ জানুক।”
পুতিন ও মোদীর আলোচনা:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবারে তাঁদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা:
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো।
ভারত–রাশিয়া বাণিজ্যকে বাইরের চাপ থেকে সুরক্ষিত রাখা।
স্মল মড্যুলার নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রকল্পে সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব।
ভারত–আমেরিকা সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়ে বিশ্লেষণ।
কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্মৃতিচারণা:
কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ারাম রমেশ ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত নেতা নিকোলাই বুলগানিন ও নিকিতা খ্রুশচেভের ঐতিহাসিক ভারত সফরের প্রসঙ্গ তুলে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, সেই ১৯ দিনের সফরের ফলেই মিগ–বিমান তৈরির প্রযুক্তি হস্তান্তর, ওএনজিসি–র জন্ম এবং আইডিপিএল-সহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান সম্ভব হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট পুতিন শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ দিল্লি ছাড়বেন। প্রায় ২৮ ঘণ্টার এই সফরকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে কড়া নজরদারি চলছে।