দুশ্চিন্তায় রাজ্যের ১ লক্ষ শিক্ষক! আদালতের নির্দেশে ১৫-২০ বছরের পুরনো শিক্ষকদেরও বসতে হবে টেট পরীক্ষায়, না হলে কী হবে?

প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকারা এখনও টেট (TET) উত্তীর্ণ নন, তাঁদের টেট পরীক্ষায় বসে যোগ্যতা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ ঘিরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য এবার ফের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

স্কুলশিক্ষা দপ্তর থেকে এই বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল নবান্নে। সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে সবুজ সংকেত মিলতেই বিকাশ ভবনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক এখন গভীর দুশ্চিন্তায়। বিশেষত, যাঁরা গত ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে প্রাথমিক স্কুলে কর্মরত, তাঁরাও এই নির্দেশের আওতায় পড়ছেন। অনেকের আশঙ্কা, তাঁরা হয়তো চাকরি হারাতে পারেন।

আদালতের রায়ে কী বলা হয়েছিল?
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পদোন্নতির ক্ষেত্রেও শিক্ষককে টেট উত্তীর্ণ হতে হবে। আদালতের রায় অনুযায়ী:

সময়সীমা: আগামী ২ বছরের মধ্যে যারা টেট পাশ করতে পারবেন, তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে।

চাকরি হারানোর ভয়: নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টেট উত্তীর্ণ না হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে চাকরি ছাড়তে হবে বা বাধ্যতামূলক অবসরের জন্য আবেদন করতে হবে।

ছাড়: তবে যাঁরা আগামী ৫ বছরের মধ্যে অবসরে যাচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে টেট পাশ বাধ্যতামূলক নয়।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পর রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নতুন করে টেট পরীক্ষায় বসতে হবে। ফলে পঠনপাঠনে প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে শিক্ষা মহলে।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেও এখন যদি যোগ্যতার পরীক্ষায় বসতে হয়, তা হলে চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে বড়সড় অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। রাজ্য সরকারের তরফে তাই এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে কিছুটা সময় ও সুযোগ চাওয়া হতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলের ধারণা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy