দু’দিনের সরকারি সফরে আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রাজধানী দিল্লি, তবে এই সফরকে ঘিরে নজিরবিহীন কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহর। রাজধানীতে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। কোনায় কোনায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ সোয়াট (SWAT) এবং স্নাইপার দল।
শীর্ষ পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সফরসূচি যাতে নির্বিঘ্নে হয়, তার জন্য ৫,০০০-এরও বেশি পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। পুতিনের আগমন থেকে তাঁর প্রস্থান পর্যন্ত, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের গতিবিধি একাধিক নিরাপত্তা সংস্থা দ্বারা মিনিট-টু-মিনিট সমন্বয়ের মাধ্যমে ট্র্যাক করা হবে। সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং দিল্লি পুলিশ যৌথভাবে এই অপারেশনের দায়িত্বে রয়েছে।
কোথায় থাকবেন পুতিন?
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার জেরে পুতিন ঠিক কোথায় থাকবেন, সে ব্যাপারে এখনই কিছু প্রকাশ করা হয়নি। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রেসিডেন্ট পুতিনের সফরসূচি নির্বিঘ্নে করার জন্য মিনিট-টু-মিনিট সমন্বয় করে কাজ চলছে। সমস্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সর্বত্র সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
দিল্লি পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই পুতিনের সময় ও সফরসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এমন স্থানগুলির আশেপাশে রুটের নিরাপত্তা, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা এবং এলাকা স্যানিটাইজেশনের তদারকি করছেন। ভিভিআইপিদের চলাচলের জন্য নির্ধারিত সমস্ত রুট আগে থেকেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এছাড়াও, ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থাও সক্রিয় রাখা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং পুতিনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিভাগ সংবেদনশীল পয়েন্টগুলিতে SWAT টিম, সন্ত্রাস-বিরোধী ইউনিট, স্নাইপার এবং দ্রুত-প্রতিক্রিয়া দল নিয়ে একটি বহু-স্তরীয় নিরাপত্তা গ্রিড তৈরি করেছে।
কূটনৈতিক দিক: তেল এবং প্রতিরক্ষা
উল্লেখ্য, পুতিন মূলত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে চলা ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আসছেন। এই সম্মেলনটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য আমেরিকা নয়াদিল্লির উপর শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও দুই দেশই জানিয়েছে, এই সম্মেলনে বাণিজ্য, জ্বালানি অংশীদারিত্ব এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার উপর জোর দেওয়া হবে। এই সফরের ঠিক আগে, মস্কো ভারতের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তিও অনুমোদন করেছে, যা দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।