বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার গিরিশ পার্কে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে এক হবু পাইলটের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায় শহরে রহস্য ছড়িয়েছে। মৃতের নাম সৌম্যাদিত্য কুণ্ডু, বয়স ২১ বছর। মৃত তরুণ ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন প্রশিক্ষণ নিয়ে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণ সৌম্যাদিত্য কুণ্ডু ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতেন। তিনি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাইলটের প্রশিক্ষণ নিয়ে শহরে ফিরেছিলেন। এরপরই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটল।
কীভাবে দেহ উদ্ধার হলো?
এ দিন সকালে গিরিশ পার্ক থানার কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে অস্বাভাবিক গন্ধ অনুভব করেন কিছু মানুষ। এরপর তাঁরা বাড়ির একটি ঘরে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
গিরিশ পার্ক থানার তদন্তকারীরা এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। গিরিশ পার্ক থানার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারাও।
অস্বাভাবিক আচরণের পরিবর্তন
লালবাজার সূত্রের খবর, মৃত সৌম্যাদিত্যর পরিচিতরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পরই তাঁর আচরণে পরিবর্তন আসে। তিনি অস্বাভাবিক চুপচাপ হয়ে পড়েছিলেন এবং খুব বেশি কারও সঙ্গে কথা বলতেন না।
পরিবারের বক্তব্য: তাঁর কোনো বিশেষ সমস্যা বা দুশ্চিন্তা ছিল কি না, তা পরিবার স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। তবে পরিবারের সদস্যরা স্বীকার করেছেন যে গত কয়েকদিন ধরে ছেলের মন খারাপ ছিল বলে তাঁদের মনে হয়েছিল।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার জানান, “গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আমরা কথা বলছি।”
রহস্যের জট খুলতে তদন্ত
গোয়েন্দাদের প্রাথমিকভাবে অনুমান, ওই তরুণ চরম পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারেন। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, সেই সম্ভাবনাও তদন্তকারীরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
তদন্তের দিক: পুলিশ খতিয়ে দেখছে ঠিক কী কারণে সৌম্যাদিত্য এমন চরম পদক্ষেপ নিলেন। এছাড়াও, তিনি পরিত্যক্ত বাড়িটিতে কীভাবে গেলেন, সেখানে কবে থেকে ছিলেন এবং কেউ তাঁকে সেখানে দেখেছিল কি না, এসব দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তরুণ, শান্ত স্বভাবের এই পাইলট প্রার্থীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।