ত্রিপুরার যুবসমাজই এইডস-এর শিকার! ‘৮৩% আক্রান্ত তরুণ-তরুণী’ — বিস্ফোরক তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা

ত্রিপুরার যুবগোষ্ঠীই সবচেয়ে বেশি এইচআইভি/এইডস-এর শিকার—এমন বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আগরতলার এমবিবি মাঠে রাজ্যভিত্তিক এইডস দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি জানান, ত্রিপুরায় মোট আক্রান্তের ৮৩% হল যুবগোষ্ঠী, যার মধ্যে ৩৯% মহিলা। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে এইডস মোকাবিলায় আরও স্ক্রিনিং বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তর, গোমতী ও ধলাই জেলায় ক্যানসার কেয়ার সেন্টারের ভার্চুয়াল উদ্বোধনের পাশাপাশি এইডস সচেতনতা অনুষ্ঠানে ডাঃ সাহা বলেন, এইচআইভি সংক্রমণ একবার হলে তা নির্মূল করার ওষুধ এখনও নেই। তবে আধুনিক চিকিৎসায় ভাইরাল লোড কমিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত ত্রিপুরা: ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির কাজের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাদের সার্বিক প্রচেষ্টার নিরিখে জাতীয় এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির পর্যালোচনায় ত্রিপুরা ‘গুড পারফর্মিং স্টেট’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এবং পুরস্কৃত হয়েছে।

স্কুল-কলেজে কড়া নির্দেশ: যুবসমাজকে নেশা ও মানসিক ব্যাধি থেকে দূরে রাখার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু ধরপাকড় করলেই হবে না, ড্রাগের শিকার ছেলেমেয়েদের সতর্ক করা প্রয়োজন। তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশে বলেন, ক্লাসে উচ্ছৃঙ্খলতা বা কারও অনুপস্থিতির দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। তিনি এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির কাছে স্কুল স্তরেও ‘রেড রিবন ক্লাব’ শুরু করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্লাসে অন্তত ৫ মিনিট এইডস এবং ড্রাগস-এর বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক আলোচনা করার নির্দেশ দেন। ক্লাব এবং সামাজিক সংস্থাগুলিকেও এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে।

আক্রান্তদের জন্য মাসিক ভাতা: মুখ্যমন্ত্রী তথ্য দিয়ে জানান, ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ত্রিপুরায় মোট এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৪১৭ জন, যার মধ্যে মহিলা ১,২২২ জন, পুরুষ ৫,১৮৯ জন ও ট্রান্সজেন্ডার ৬ জন। সরকার আক্রান্তদের মাসিক ₹২,০০০ টাকা করে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy