ডিমের বাজারে আগুন! পকেটে টান মধ্যবিত্তের, কেন শীত পড়লেই আকাশছোঁয়া দাম এই সুষম আহারের?

শীতের আমেজ উপভোগ করার বদলে সাধারণ মানুষের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ‘আদি ও অকৃত্রিম’ প্রোটিন-ভরসা ডিম। বছরের শেষলগ্নে এসে রেকর্ড হারে বাড়ছে ডিমের দাম। খুচরো বাজারে একটি ডিমের দাম ৮ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে, কোথাও কোথাও তা আরও বেশি। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার, যাদের কাছে প্রোটিনের প্রধান উৎস ছিল এই ডিম, তাঁদের কাছে এখন এটি রীতিমতো বিলাসিতার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শীতকালে কেন বাড়ে দাম? প্রতি বছরই ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ডিমের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। স্কুল হোস্টেল থেকে শুরু করে রাস্তার ধারের দোকান, এমনকি বড়দিনের কেক তৈরির কারখানাতেও ডিমের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। অন্যদিকে, এই সময়ে নদী বা ভেড়ির জল সেঁচে মাছ চাষের প্রস্তুতি চলায় স্থানীয় মাছের জোগানে সাময়িক ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে বিকল্প হিসেবে সাধারণ মানুষ ডিমের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। চাহিদা ও জোগানের এই বিশাল ফারাকই দামবৃদ্ধির প্রধান কারণ।

উৎপাদন ও খরচ বৃদ্ধির সঙ্কট: পোলট্রি মালিকদের মতে, এবারের পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। গত দু’বছরে লোকসানের জেরে অনেক ছোট ও মাঝারি পোলট্রি ফার্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার ওপর মুরগির প্রধান খাদ্য ভুট্টা ও সয়াবিনের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় খামার মালিকদের উৎপাদন খরচ প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ভারত থেকে আসা ডিমের পরিবহন খরচও প্রতিটি ডিমে ২০ থেকে ৪০ পয়সা পর্যন্ত বেড়েছে।

আর কি কমবে দাম? জানুয়ারি মাস কেটে গেলে ফেব্রুয়ারির দিকে ডিমের চাহিদা কিছুটা কমতে পারে, ফলে দামও সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পোলট্রি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের দাবি, দাম কমলেও তা আর আগের মতো সাড়ে ৬ টাকা বা ৭ টাকায় ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। উৎপাদন খরচ যেভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে ডিমের দাম মধ্যবিত্তের পকেটের নাগালে থাকবে কি না, তা নিয়ে বড়সড় সংশয় তৈরি হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy