মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে। দল থেকে সাসপেন্ড (Suspended) হওয়ার পরেও ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরতে নারাজ। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অবশ্যই হবে, এবং তিনি দলের সাসপেনশনকে পরোয়া করছেন না।
তৃণমূলনেত্রীকে কার্যত হুঁশিয়ারি:
হুমায়ুন কবীর শুধু তাঁর কর্মসূচিতে অনড় নন, তিনি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা কী হিন্দুস্তান? মুসলমানদের কিছু করার অধিকার আছে কিনা, সেটা আগামীদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুঝিয়ে দেব। আমাকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া উনি কিছু করতে পারবেন না।”
মুসলিমদের অধিকার ও খুনের আশঙ্কা:
এদিন শুধু অনুষ্ঠানের কথা নয়, বারবার মুসলিমদের অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে সরকারি টাকায় মন্দির হচ্ছে, দুর্গাপুজোয় অনুদান দেওয়া হচ্ছে, অথচ মুসলমানদের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুললেই সমস্যা। অধিকার খর্ব হওয়ার আশঙ্কা থেকেই তিনি দাবি করেন, “দুটো ক্ষতির সম্ভাবনা আছে।”
প্রকাশ্যে প্রাণহানির আশঙ্কাও করেছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, “আমাকে কাউকে দিয়ে খুন করিয়ে দিতে পারে। আমি নিশ্চয় খুনের আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এরা চক্রান্ত করে আমাকে খুন করিয়ে দিতে পারে। খুন হতেও প্রস্তুত আছি। মরতে আমি ভয় পাই না।”
দলের অবস্থান ও হুমায়ুনের প্রস্তুতি:
হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, তিনি কোনও বিশেষ সতর্কতা নিচ্ছেন না। “অনুষ্ঠান যেমন হওয়ার তেমনই হবে। ২ হাজার ভলান্টিয়র থাকবে। আমাকে গ্রেপ্তার করতে চাইলে করবে, আমি বাধা দেব না। গ্রেপ্তারের পর আইনের পথে লড়ব।”
অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি—হুমায়ূনের এমন কর্মকাণ্ড রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে নষ্ট করতে পারে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে তাঁর এই অবস্থান দল মেনে নিতে পারেনি, তাই সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে আসা এই বিধায়ককে গ্রেফতারের নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।