আজকের ইঁদুর দৌড়ের জীবনে স্থূলতা বা মেদবৃদ্ধি এক বিশ্বজনীন সমস্যা। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই এখন জিমে ঘাম ঝরানোর চেয়ে ওজন কমানোর ওষুধ বা ইনজেকশনের মতো ‘শর্টকাট’ রাস্তার দিকে ঝুঁকছেন। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই প্রবণতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন যোগগুরু বাবা রামদেব। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, সিন্থেটিক উপায়ে ওজন কমানোর এই ইনজেকশনগুলি শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মরণফাঁদ হয়ে উঠতে পারে।
ওজেম্পিক-উইগোভির মতো ওষুধের বিপদ: বর্তমানে বাজারে ওজেম্পিক (Ozempic), উইগোভি (Wegovy) বা মাউঞ্জারোর (Mounjaro) মতো ইনজেকশন ও ওষুধের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সংস্থাগুলির দাবি, এগুলো খিদে কমিয়ে দ্রুত ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। কিন্তু রামদেবের দাবি, এই কৃত্রিম পদ্ধতি শরীরের স্বাভাবিক মেটাবলিজম নষ্ট করে দেয়। পতঞ্জলির আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রসঙ্গ উঠলে তিনি দাবি করেন, তাঁদের তৈরি ওষুধ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি, এতে কোনো ক্ষতিকারক সিন্থেটিক রাসায়নিক নেই।
রামদেবের ঘরোয়া ‘স্লিম’ ফর্মুলা: যোগগুরুর মতে, ওজন কমানোর জন্য দামী ওষুধের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি কয়েকটি সহজ টিপস শেয়ার করেছেন:
উষ্ণ জল ও লাউয়ের রস: সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম জল পান এবং লাউয়ের রস খাওয়া অতিরিক্ত চর্বি গলাতে অব্যর্থ।
যোগ ও দৌড়: রামদেব নিজে প্রতিদিন ভোর ৩টেয় ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম করেন। তিনি শরীরকে সচল রাখতে নিয়মিত সকালে দৌড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
উপবাস ও ‘ডিজিটাল ফাস্টিং’: কেবল শরীরের জন্য নয়, মনের সুস্থতার জন্যও রামদেব ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ বা সবিরাম উপবাসের কথা বলেছেন। তাঁর পরামর্শ, পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম দিতে দিনে একবার আহার করা অত্যন্ত উপকারী। এর পাশাপাশি তিনি এক অদ্ভুত কিন্তু কার্যকর পরামর্শ দিয়েছেন— ‘ডিজিটাল ফাস্টিং’। দিনে অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন থেকে দূরে থাকলে মন শান্ত থাকে এবং কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমে, যা পরোক্ষভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
যোগগুরুর বার্তা পরিষ্কার: সুস্বাস্থ্যের কোনো শর্টকাট হয় না। বড়ি বা ইনজেকশনের পিছনে না ছুটে যোগব্যায়াম এবং সঠিক জীবনযাত্রাই দীর্ঘায়ুর একমাত্র রহস্য।