এক নিঃসন্তান বৃদ্ধাকে নিজের ‘মা’ সাজিয়ে ভোটার কার্ড ও অন্যান্য সরকারি নথি তৈরির অভিযোগ উঠেছে এক বাংলাদেশি মহিলা অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, ওই মহিলা বৃদ্ধার সম্পত্তিও হাতানোর চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। ঘটনাটি সামনে আসতেই উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম শিমুলিয়া এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কী জানা যাচ্ছে: জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের খুলনা এলাকার জনৈক জান্নাতুল মণ্ডল নামে এক তরুণী কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে হাসনাবাদে আসে। সে হাসনাবাদ ব্লকের পশ্চিম শিমুলিয়ার ১৫ নম্বর বুথে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে আশ্রয় নেয়। কয়েক বছর আগে ওই মহিলার স্বামী মারা যান। এরপর সেই স্বামীহারা অসহায় বৃদ্ধা রহিমা সর্দারকে মা বানিয়ে জান্নাতুল মণ্ডল তার ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড-সহ যাবতীয় নথি তৈরি করে ফেলে।
সরকারি সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ: অভিযোগ উঠেছে, ভুয়ো নথির মাধ্যমে জান্নাতুল মণ্ডল বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রেশনের মালপত্র-সহ সমস্ত সরকারি সুবিধা ভোগ করছে।
বৃদ্ধার বক্তব্য: এই ঘটনা প্রসঙ্গে বৃদ্ধা রহিমা সর্দার বলেন:
“কয়েক বছর হল আমার স্বামী মারা গিয়েছেন। এখন আমার আপনজন বলতে আর কেউ নেই। সম্প্রতি SIR (Special Intensive Revision of Electoral Rolls) শুরু হওয়ার পর জানতে পারলাম, আমার নাম ব্যবহার করে জান্নাতুল মণ্ডল ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করেছে। আমার সঙ্গে ওর কোনো সম্পর্ক নেই। আমি চাই, আমার নাম যারা ব্যবহার করেছে, তাদের নাম যেন ভোটার তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়।”
স্থানীয়দের ক্ষোভ: স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, “আমরা জানি জান্নাতুলের বাড়ি বাংলাদেশে। এখানে এসআইআর (SIR) শুরু হওয়ার পর শুনতে পাচ্ছি, রহিমা বিবিকে মা সাজিয়ে ভোটার কার্ড বানিয়ে নিয়েছে। আমরা চাই, যাঁরা প্রকৃত ভোটার, তাঁদের নাম যেন ভোটার তালিকায় থাকে। ভুয়ো ভোটারদের নাম বাতিল করা হোক।”
বৃদ্ধার অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাকে মা সাজিয়ে ভোটার-আধার কার্ড বানানোর এই গুরুতর অভিযোগ ওঠায় স্থানীয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের নথিপত্রের উপর প্রশ্ন উঠছে।