‘রূপ নিয়ে কমপ্লেক্সে’ ভুগে গত দু’বছরে একই পরিবারের চার শিশুকে অস্বাভাবিকভাবে খুন করার অভিযোগে শিউরে উঠেছে হরিয়ানা। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় বাড়ির বউ পুনমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযুক্ত মহিলা পুনম চাইতেন না, পরিবারের আর কেউ তাঁর থেকে সুন্দরী হোক, আর সেই কারণেই পরবর্তী প্রজন্মের চার সন্তানকে তিনি খুন করেছেন।
পর পর অস্বাভাবিক মৃত্যু:
হরিয়ানার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা পুনমের শ্বশুরবাড়িতে গত দু’বছরে চার সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
প্রথম খুন (২০২৩): পুনমের ননদের ৯ বছরের মেয়ে ইশিকা খুন হয়।
পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে খুন: ইশিকার খুনের পর পরিবারের অনেকের সন্দেহ পুনমের ওপর পড়ে। সেই সন্দেহ মেটাতে ও পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য ২০২৩ সালে পুনম নিজের ৪ বছরের ছেলেকেও খুন করেন বলে জেরায় স্বীকার করেছেন (পুলিশ এটিকে ‘রেড হেরিং’ বলে উল্লেখ করেছে)।
তৃতীয় শিকার: এরপর বাড়ির তিন নম্বর সন্তান আট বছরের জিয়া খুন হয়।
সাম্প্রতিকতম সংযোজন: চতুর্থ ভিক্টিম ২ বছরের মেয়ে বিধি।
হত্যার নৃশংস পদ্ধতি:
বিধি এবং অন্য শিশুদের খুনের পদ্ধতি ছিল মর্মান্তিক:
বিধি খুন: পুনমের আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সুযোগে পুনম বিধির বিশ্বাস অর্জন করে তাঁকে আত্মীয়ের বাড়ির স্টোর রুমে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানে জল ভর্তি গামলায় তাঁকে চুবিয়ে মারা হয়।
অন্যান্য: এর আগে একবার বিধির মুখে কেটলি থেকে গরম চা ঢেলে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। জিয়ার দেহ উদ্ধার হয়েছিল বাড়ির একটি ঘর থেকেই।
আসল কারণ ‘সৌন্দর্য’:
চতুর্থ সন্তান বিধির খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ পুনমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বিধির বাবা পুলিশকে পুরনো একটি ঘটনার তথ্য দেওয়ার পরই পুনমের ওপর সন্দেহ বাড়ে। জেরার মুখে ভেঙে পড়েন পুনম এবং একে একে চারটি খুনের কথা স্বীকার করেন।
পুলিশের দাবি, পুনম মনে করতেন পরিবারের তিন কন্যাই তাঁর থেকে দেখতে সুন্দর ছিল, তাই তিনি তাদের খুন করেছেন। নিজের ছেলেকে তিনি খুন করেছিলেন কেবল পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে।
এই সিরিয়াল কিলিং-এর ঘটনায় গোটা গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এবং পরিবার পুনমের ফাঁসি দাবি করেছে।