দলের নীতি ও শৃঙ্খলা— এই প্রশ্নে যে বিন্দুমাত্র আপোস করা হবে না, তা ফের একবার স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দিল্লিতে তৃণমূল সাংসদদের নিয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, দলকে না জানিয়ে কোনো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যাবে না। আর এই বার্তার পরই প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে নিজের ‘ভুল’ ও অবস্থান স্পষ্ট করলেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন বিতর্কে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’? অভিযোগ উঠেছিল, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন রচনা। তৃণমূলের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানে যেখানে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে লড়াই চলছে, সেখানে কোনো সাংসদ নিজের উদ্যোগে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তা দলের ভাবমূর্তিতে আঘাত করতে পারে বলে মনে করছে ঘাসফুল শিবির।
“ভুল তো সবার হয়”— রচনার সাফাই
অভিষেকের নির্দেশের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রচনা বলেন:
“দলের নির্দেশ যেটা হবে, সেটাই আমাদের পালন করতে হবে। সংসদীয় ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে দিদি (মমতা) বা অভিষেককে সরাসরি মেইল করতে বলা হয়েছে, আমরা সেটাই করব।”
নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে তিনি আরও বলেন, “ভুল তো সবার মধ্যেই হয়। কীর্তি আজাদ একটি ভুল করে ফেলেছিলেন, সেটা থেকে আমরা সবাই সজাগ হয়ে গিয়েছি। আমরা যদি কখনো কোনো ভুল করে থাকি, সেটা জেনে করি না।”
রেলমন্ত্রীর দরবারে কেন গিয়েছিলেন রচনা?
সাংসদ হিসেবে নিজের এলাকার মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলে জানান। রচনার ব্যাখ্যা অনুযায়ী:
তাঁর সংসদীয় এলাকা ধনেখালিতে আগামী দিনে এক বিরাট ‘বিশ্ব ইজতেমা’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
সেখানে দেশ-বিদেশের বহু মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষ জমায়েত করবেন।
দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বিমানের (ট্রেনের পরিবর্তে বিমানের উল্লেখ করেছেন রচনা, যা নিয়ে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে) সংখ্যা বা পরিষেবার উন্নতির দাবি জানাতেই তিনি রেলমন্ত্রীর সময় চেয়েছিলেন।
দলীয় শৃঙ্খলা বনাম ব্যক্তিগত উদ্যোগ রচনা স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। অভিষেক স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘দিল্লি জল খুব একটা ভালো নয়’, তাই সংসদ অধিবেশন শেষে যেন সাংসদরা সরাসরি নিজের এলাকায় ফিরে গিয়ে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে ব্যক্তিগত দরবার না করে দলীয় মঞ্চ ব্যবহার করেন।