সুস্থ থাকতে দুধ চা, লাল চা নাকি গ্রিন টি-কোনটা স্বাস্থকর ?বিশেষজ্ঞদের থেকে জেনেনিন

সকালে উঠেই গরম এক কাপ চায়ের সঙ্গে নাস্তা, কাজের চাপে নিজেকে একটু রিল্যাক্স রাখতে চায়ের কাঁপে চুমুক দেওয়া কিংবা আড্ডার টেবিলেও থাকা চাই প্রিয় এই গরম পানীয়টা।

চায়ের কথা বলতেই চোখের সামনে নিশ্চয় ভেসে ওঠে গরম এককাপ পারফেক্ট বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ ও ঘনত্বের দুধ চায়ের ছবি। অনেকেই অবশ্য দুধ চা এড়িয়ে যান ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স কিংবা গ্যাস্ট্রিক আলসারের সমস্যার জন্য। সেক্ষেত্রে লাল চায়ের সঙ্গে চলে সখ্যতা।

এছাড়া এখনকার সময়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সচেতনতামূলক তথ্যের জন্য গ্রিন টির দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই। বিশেষত যারা লাল চা পান করেন, গ্রিন টিকেও পানীয়ের তালিকায় রাখছেন স্বাচ্ছন্দে। আবার অনেকেই তিন ধরণের চা-ই নিয়মিত পান করেন সময় ও সুযোগ বুঝে।

কিন্তু এই তিন প্রকারের চায়ের মাঝে কোন চা সবচেয়ে উপকারী ও স্বাস্থ্যকর? সেটা সম্পর্কেই আজকের ফিচারে আলোচনা করা হয়েছে।

ফ্লোরাইডের উপস্থিতি
এক্ষেত্রে লাল চা ও গ্রিন টি অগ্রাধিকার পাবে। উভয় চা থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ফ্লোরাইড পাওয়া যাবে, কিন্তু দুধ চায়ের ক্ষেত্রে হতে হবে হতাশ। গ্রিন টি ও লাল চা দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অবশ্য গ্রিন টি ও লাল চায়ের মধ্যে ফ্লোরাইড বেশি পাওয়া যাবে গ্রিন টি থেকে (0.3-0.4mg).

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উপস্থিতি
এক্ষেত্রেও দুধ চা পেছনের দিকেই থাকবে এবং সামনের দিকে থাকবে গ্রিন টি ও লাল চা। এই দুই ধরণের উপকারী চায়ে পাওয়া যায় ক্যান্সার প্রতিরোধকারী শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অন্যদিকে দুধ চায়ে মিশ্রিত দুধ অ্যান্টি-অক্সিডেন্টকে শরীরে শোষিত হতে বাধাপ্রদান করে। তবে ফ্লোরাইডের উপস্থিতির মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উপস্থিতির ক্ষেত্রেও গ্রিন টি সবচেয়ে বেশি ভালো। গ্রিন টি থেকে পাওয়া যায় ক্যাটেচিন (Catechin) নামক ফ্ল্যাভনয়েড। যা ক্যান্সার কোষের জিনের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

ক্যাফেইনের উপস্থিতি
লাল চা গ্রিন টি- উভয় ধরণের চা থেকেই পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যাফেইন। তবে লাল চায়ের তুলনায় গ্রিন টিতে ক্যাফেইন মাত্রা থাকে কিছু কম। যদি আপনি সকাল বেলা ঘুমভাব দূর করে পুরোদমে কাজ শুরু করতে চান তবে লাল চা হবে সবচাইতে ভালো পছন্দ। যদি লাল চা না থাকে তবে গ্রিন টিও পান করতে পারেন। তবে দুধ চায়ের ক্ষেত্রে ক্যাফেইনের মাত্রা হবে একেবারেই কম এবং লাল চা পানে যেমন রিফ্রেশিং ভাব তৈরি হয়, দুধ চা থেকে তেমনটা পাওয়া যাবে না।

হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারিতা
হৃদযন্ত্রকে যদি সুস্থ রাখতে চান তবে তিন ধরণের চায়ের মাঝে লাল চা হবে সবচাইতে উৎকৃষ্ট চা। তবে গ্রিন টিও ব্লাড ভ্যাসেলের চাপকে হ্রাস করতে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কাজ করে। অন্যদিকে লাল চা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে দুধ চা হৃদযন্ত্রের উপর উপকারি কোন ফেলে কিনা, এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

এক্ষেত্রে বলা যায়, প্রতিদিনের কাপের পর কাপ চা পানের অভ্যাসের ক্ষেত্রে লাল চা নতুবা গ্রিন টি পানের অভ্যাস গড়ে তোলাই হবে সর্বাপেক্ষা উত্তম। স্বাদের বিবেচনায় দুধ চা সবসময় এগিয়ে থাকলেও, নিয়মিত দুধ চা পানের পরিবর্তে কদাচিৎ পান করা যেতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy