আপনার কি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার অভ্যাস আছে? অনেকে একে গভীর ঘুমের লক্ষণ মনে করে হাসি-ঠাট্টা করলেও, সাম্প্রতিক এক গবেষণা একে দেখছে মারণ রোগের সঙ্কেত হিসেবে। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষকের দাবি—যাঁরা নিয়মিত নাক ডাকেন, তাঁদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
বিপজ্জনক ‘ওএসএ’ (OSA) সমস্যা কী? নাক ডাকার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ‘অবসট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ওএসএ। এই সমস্যায় ঘুমের সময় নাকের ভেতর দিয়ে বায়ুপ্রবাহের পথ বারবার রুদ্ধ হয়ে আসে, ফলে বিকট শব্দের সৃষ্টি হয়। বারসেলোনায় আয়োজিত এক বিজ্ঞান সম্মেলনে বিজ্ঞানী আন্দ্রেয়াস পাম এই বিষয়ের ওপর একটি গবেষণাপত্র পেশ করেন।
গবেষণার চমকে দেওয়া ফলাফল: বিজ্ঞানীরা ৪২০০ জন ওএসএ (OSA) আক্রান্ত রোগীর ওপর দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে পরীক্ষা চালান। ফলাফলে দেখা গেছে, এই বিপুল সংখ্যক রোগীর প্রায় অর্ধেকই গত পাঁচ বছরের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন।
কেন বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি? আগে ধারণা করা হতো, নাক ডাকা রোগীদের স্থূলতা বা ডায়াবিটিসের কারণেই ক্যানসার হয়। তবে নতুন এই গবেষণায় উঠে এসেছে অন্য এক কারণ:
-
অক্সিজেনের অভাব: ওএসএ সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের রক্তে ঘুমের মধ্যে দ্রুত অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
-
কোষের ক্ষতি: বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে রক্তে এই অক্সিজেনের ঘাটতিই শরীরের সুস্থ কোষগুলোকে ক্যানসার কোষে রূপান্তরিত করতে উসকানি দেয়।
সতর্কতা: গবেষকদের মতে, বিষয়টি নিয়ে আরও বিশদ গবেষণার প্রয়োজন থাকলেও নাক ডাকা মোটেও হেলাফেলার নয়। আপনার যদি নিয়মিত নাক ডাকার পাশাপাশি ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসার মতো সমস্যা হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সম্পাদকের শেষ কথা: আপনার প্রিয়জনেরও কি এই সমস্যা আছে? তবে এখনই এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করে তাঁকে সচেতন করুন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে অনেক বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।