আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা যেন এক অন্তহীন ইঁদুর দৌড়। অফিসের কাজের চাপ, পড়াশোনার বোঝা কিংবা পারিবারিক জটিলতা – নানা কারণে আমরা প্রায়শই মানসিক অস্থিরতা ও চাপের শিকার হই। এই মানসিক চাপ ধীরে ধীরে অনেককে অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়। তাই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। সমস্যা গুরুতর হলে অবশ্যই চিকিৎসক বা মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে। তবে সাধারণভাবে, কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি এবং দৈনন্দিন রুটিনে কিছু নিয়ম মেনে চললে মানসিক চাপ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। জেনে নিন সেই উপায়গুলো:
শরীরচর্চা:
নিয়মিত শরীরচর্চা কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো নয়, মানসিক শান্তির জন্যও অপরিহার্য। এমন কিছু ব্যায়াম করুন যা আপনার পেশিগুলোকে শিথিল করতে সাহায্য করে। এর ফলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যাবে। পাশাপাশি, প্রতিদিন যোগাসনের অভ্যাস রাখা মানসিক শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যারোমা থেরাপি:
সুগন্ধ আমাদের মনকে শান্ত ও প্রফুল্ল করতে পারে। তাই আপনার ঘরে সুগন্ধি ফুল রাখতে পারেন। এছাড়াও, বিভিন্ন সুগন্ধী মোমবাতি বা এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে সতেজ করতে সাহায্য করে। এই সুগন্ধি দ্রব্যগুলো দমবন্ধ করা পরিবেশ থেকে মুক্তি দেয় এবং মনকে ভালো করে তোলে।
আঁকা, ডুডল এবং রঙ:
বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই বলে থাকেন, রঙ তুলি হাতে নিলে মানসিক চাপ কমতে বাধ্য। সৃজনশীল বা শৈল্পিক যেকোনো কাজে মনোযোগ দেওয়া মানসিক শান্তির জন্য খুব উপকারী। সেটা ছবি আঁকা হতে পারে, আঁকা ছবিতে রঙ করা হতে পারে অথবা আপনি ডুডলিংয়ের মতো সহজ কাজেও মন দিতে পারেন। এর মাধ্যমে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক চাপ কমে।
মনের পছন্দের কাজ:
যে কাজগুলো করতে আপনার ভালো লাগে এবং মানসিক শান্তি এনে দেয়, সেই কাজগুলোতে অবশ্যই সময় দিন। ভালো গান শোনা, পছন্দের সিনেমা দেখা বা ভালো বই পড়ার পাশাপাশি যাদের বাগান করার শখ আছে, তারা গাছের পরিচর্যায় সময় কাটাতে পারেন। এছাড়াও, অনেকেই রান্না করতে ভালোবাসেন। মানসিক চাপ অনুভব করলে চটজলদি নিজের পছন্দের কোনো পদ রান্না করে দেখতে পারেন। রান্নাঘরে প্রবেশ করলে পাকা রাঁধুনিদের মন ভালো হতে বাধ্য।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করা এবং প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হোন এবং একটি চাপমুক্ত জীবন যাপন করুন।