আজকাল চুল রং করা একটি জনপ্রিয় ফ্যাশন ট্রেন্ড। পাকা চুল লুকানো হোক কিংবা সখের বশে নতুন লুক আনা, অনেকেই চুলে রং করে থাকেন। পার্লারে চুল রং করানো বেশ ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই দোকানে উপলব্ধ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হেয়ার কালার কিনে বাড়িতেই চুল রঙিন করে নেন। তবে বাড়িতে চুল রং করার আগে কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কারণ শুধুমাত্র রং করলেই হবে না, চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করাও সমান জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বাড়িতে চুল রং করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। নিচে সেই বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:
১. অ্যামোনিয়ামুক্ত রং নির্বাচন:
দোকান থেকে হেয়ার কালার কেনার সময় অবশ্যই দেখে নিন তাতে অ্যামোনিয়া আছে কি না। অ্যামোনিয়া চুলের জন্য ক্ষতিকর। এটি চুলের প্রাকৃতিক মসৃণতা নষ্ট করে এবং চুলকে রুক্ষ করে তোলে। এছাড়াও, অ্যামোনিয়াযুক্ত রঙ থেকে একটি তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ বের হয় যা চোখ জ্বালা করতে পারে। তাই অ্যামোনিয়ামুক্ত রং ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. কেরাটিন বা স্ট্রেটনিংয়ের পর অপেক্ষা:
যদি সম্প্রতি চুলে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বা স্ট্রেটনিং করিয়ে থাকেন, তবে உடனடியாக চুলে রং করা উচিত নয়। অন্তত এক মাস অপেক্ষা করার পরই রং করানো যেতে পারে। স্ট্রেটনিং বা স্মুদনিংয়ের পরপরই চুলে রং করলে চুল ঝরার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ এই উভয় প্রক্রিয়াতেই রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। কিছু দিন ব্যবধান বজায় রাখলে চুলের উপর রাসায়নিকের অতিরিক্ত প্রভাব এড়ানো যায়।
৩. ঠান্ডা জলে চুল ধোয়া:
চুলে রং করার পর ভুলেও গরম জল ব্যবহার করবেন না। গরম জল চুলের কেরাটিন স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে চুলের রং দ্রুত ফিকে হয়ে যায় এবং চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। রং করার পর ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধোয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
৪. হিট স্টাইলিং সরঞ্জাম কম ব্যবহার:
চুলে রং করার পর স্ট্রেটনার বা হেয়ার ড্রায়ারের মতো হিট স্টাইলিং সরঞ্জামগুলির ব্যবহার যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। রঙের রাসায়নিক উপাদান এমনিতেই চুলের কিছুটা ক্ষতি করে। তার উপর উচ্চ তাপমাত্রার সরঞ্জাম ব্যবহার করলে চুল আরও দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অল্প দিনেই ভেঙে বা ঝরে যেতে পারে।
৫. রং করার পর অন্তত দুদিন অপেক্ষা:
চুলে রং করার অন্তত দুই দিন পর শ্যাম্পু করা উচিত। এর ফলে রং চুলের প্রতিটি স্তরে ভালোভাবে বসে যাওয়ার সুযোগ পায়। তাছাড়া, সঙ্গে সঙ্গেই চুল ধুলে চুলের প্রাকৃতিক সিবাম (তেল) ধুয়ে যায়, যা রঙের স্থায়িত্ব কমিয়ে দিতে পারে এবং চুলকে রুক্ষ করে তোলে।
বাড়িতে চুল রং করার সময় এই সতর্কতাগুলি অবলম্বন করলে চুলের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আপনার রঙিন চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকবে।