অফিসের ব্যস্ততম পরিস্থিতিতে বসের ডেস্কে গিয়ে বেতন বাড়াতে খোঁচানো শুরু করলেন নিম্নমানের পোস্টে চাকরি করা আপনি। বসের ধমক খেয়ে চুপসে গেলেন হঠাৎই ৷ পাশে চায়ের কাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মচারী আস্তে করে বলে উঠলো ‘কমন সেন্স বাড়াতে হবে’।
এ নিয়ে বেশ ক’জনের মুখে হয়তো কমন সেন্স বা সাধারণ জ্ঞান বাড়ানোর কথা শুনেছেন। তবে কেউ হাতে ধরে শিখিয়ে দেয়নি, কোন কাজটি আপনার সাধারণ জ্ঞান বা কমন সেন্সের মধ্যে পড়ে আর কোনটি ভাবনার বিষয়।
চলুন ঝটপট জেনে নেওয়া যাক কয়েকটি সাধারণ জ্ঞান এর বিষয় যা রপ্ত করলে পদে পদে সাধারণ জ্ঞানের অভাবে ব্যক্তিত্বকে আহত করতে হবে না হয়তো। তার আগে জেনে নিন সাধারণ জ্ঞান বা কমন সেন্স আসলে কী।
ব্রিটানিকা ডিকশনারির তথ্য অনুসারে, কমনসেন্স হলো চিন্তা করার সক্ষমতা ও একটি ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যুতসই আচরণ। নিউজিল্যান্ডের ওয়াকাতো হ্যামিল্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত গার্ট জি.ও. ফ্লিকচার তার সাইকোলজি ও কমনসেন্স শিরোনামের এক গবেষণাপত্রে কমনসেন্সকে ৩ ভাবে বর্ণনা করেছেন
১. কমনসেন্স হলো সামাজিক ও দৈহিক পৃথিবীর প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের প্রকাশিত সাধারণ অনুমান।
২. কমনসেন্স হলো সমাজিক ও দৈহিক পৃথিবী সম্পর্কে মানুষের সামাজিক রীতি ও ছড়িয়ে দেওয়া বিশ্বাস।
৩. কমনসেন্স হলো সামাজিক ও দৈহিক পৃথিবী সম্পর্কে ছড়িয়ে দেওয়া চিন্তা বা ধারণা।
এবার জেনে নিই এমন কয়েকটি ছোটখাটো ব্যাপার সম্পর্কে, যা জ্ঞাতে অজ্ঞাতে আমরা প্রায়ই করে ফেলি।
>> বাসা থেকে বের হতে দরজা আস্তে করে টেনে বন্ধ করে দিন। তাড়াহুড়ো করে অনেকেই অতি জোরে দরজা বন্ধ করেন। যা বিল্ডিংয়ের অন্যান্য মানুষের জন্য বিরক্তির কারণ না হয়।
>> এরপর সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আস্তে নামুন আর জোরে নামুন জুতার শব্দ যাতে না হয়।
>> রাস্তা পার হওয়ার সময় হয় অপেক্ষা করুন। যে গাড়ি আসছিলো তাকে যেতে দিন। রাস্তার মাঝখানে গিয়ে রোবটের মতো হাত একটা তুলে রাখলে ড্রাইভারের ব্রেক কষতে হিমসিম খেতে হয়।
>> যানবাহনে উঠে ফোনে কথা বলার সময় নিজের কণ্ঠ সংযত রাখুন। যথাসম্ভব নিম্নস্বরে কথা বলুন। এমন স্বরে কথা বলবেন না, যাতে পাশে থাকা লোকজন আপনার দিকে মিনিটখানেক অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।
>> ফুটপাতে কখনো গা এলিয়ে হাঁটবেন না, এতে আপনার পেছনের মানুষটির সমস্যা হতে পারে। আবার হাঁটার সময় দু’হাত বেশি নড়াচড়া করবেন না, এতে আপনার পেছনে ককেউ হাঁটলে তার শরীরে আঘত লাগতে পারে।
>> বাসে এ সিটে দুজন বসলে পা যতটা সম্ভব সংকুচিত করে বসুন। একজন পা মেলে বসলে অন্যজনের জন্য বসা মুশকিল।
>> কারো স্যালারি,পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বা সিজিপিএ বা আর্থিক অবস্থার কথা হুট করেই জিজ্ঞাসা করবেন না।
>> জনসন্মুখে কারো দূর্বলতার দিক নিয়ে মজা করে তাকে হেয় করার স্বভাব বদলানো উচিত। যত কাছের ব্যক্তিই হোক, এ ধরনের কাজ অন্যের কষ্টের কারণ হতে পারে।