মুখোরোচক খাবার সামনে পেলে কিংবা বেশি ক্ষুধা পেলে অনেকেই অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। অতিরিক্ত খাওয়ার অনেক কারণ আছে। যেমন- খাওয়ার সময় গল্প করা, টিভি দেখা, বড় প্লেটে খাওয়া, অতিরিক্ত খাবার সামনে নিয়ে বসা ইত্যাদি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস।
খাবার শুরু করার অন্তত ২০ মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক সিগন্যাল দেয় আপনার কতটুকু খেতে হবে। কিন্তু দ্রুত খাওয়ার কারণে তাৎক্ষণিক মস্তিষ্ক টের পায় না কতটুকু খাওয়া হচ্ছে। যে কারণে অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতা লক্ষ্য করা যায়। পেট ফুলে থাকা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, পেটে ব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত খাওয়ার পর শারীরিক সমস্যা এড়াতে কিছু কাজ করা জরুরি। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-
>> অতিরিক্ত খাওয়ার পর কখনো কোমল পানীয় পান করবেন না। এর ফলে গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
>> অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার পর নিজের মধ্যে অপরাধবোধ সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে বরং বিশ্রাম করুন। নিজেকে আরাম দিন।
>> বেশি খাবার খাওয়ার পর কখনো শুয়ে পরবেন না। এর ফলে খাবার হজম হবে না বরং অ্যাসিডিটি বেড়ে যাবে। পেট ফুলে যাবে এবং বুকে ব্যথা ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হবে।
>> অতিরিক্তি খাবার খেলে তা চিনি হিসেবে রক্তে প্রবেশ করে। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এতে খাবার দ্রুত হজম হবে।
>> জল পান করুন। অতিরিক্ত খাওয়ার পর পেট যদিও ভর্তি হয়ে যায়, তবুও একটু পরপর জল পান করলে খাবারের মাধ্যমে শরীরে জমা হওয়া অতিরিক্ত লবণের মাত্রা হ্রাস পাবে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও শরীর আর্দ্র থাকবে।
>> খাবার খাওয়ার সময় যখনই মনে হবে আপনি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেছেন; তখনই খাওয়া বন্ধ করুন। অনেকেই আছেন, টের পাওয়ার পরও প্লেটের খাবার শেষ করার দিকে গুরুত্ব দেন। এমনটি করবেন না।
>> খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করে অন্তত ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর শরীরচর্চা করুন। এর ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি দ্রুত বার্ন হবে। সেইসঙ্গে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন। নিয়মিত অনুশীলন মেজাজ এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
>> অতিরিক্ত খাওয়ার পর আপনার পরবর্তী খাদ্যতালিকায় কী রাখবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন। অবশ্যই লো-ক্যালোরির খাবার খেতে হবে। অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে।
>> খাবার খাওয়া সময় সেদিকে ধ্যান দেয়া উচিত। অনেকেই আছেন, যারা খাওয়ার সময় খোশগল্প করেন বা ফোন ও টিভির মনিটরে তাকিয়ে থাকেন। এর ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হয়। অন্যদিকে খাবারের স্বাদ, অনুভূতি এবং রঙের দিকেও মনোযোগ দেয়া হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে মনোযোগ সহকারে খাবার খেতে হবে।
>> অনেকে অতিরিক্ত খাওয়ার পর বমি বমি ভাবসহ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো সমস্যায় ভুগেন। যদি শরীর খুবই খারাপ হয়ে যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
>> খাওয়া শুরু করার ২০ মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে ওঠে, তাই প্রথম ১০ মিনিট খুবই ধীরে ধীরে খাবার খেতে হবে। একবার খাবার মুখে নিয়ে অনন্ত ৯০ বার চাবানো উচিত। ধীরে ধীরে খাবার খেলে কম ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়। এর ফলে ওজনও কমে।