ঘুম থেকে ওঠার পর নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়াটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা, যা আমরা প্রায় সবাইকেই মোকাবিলা করতে হয়। এর কারণ হলো সারারাত ধরে মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি। কিন্তু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই দুর্গন্ধ সবসময়ই লেগে থাকে, যা বিব্রতকর হতে পারে, বিশেষ করে যখন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা বাইরে থাকেন। মুখে দুর্গন্ধ বা হ্যালিটোসিস হয় মূলত মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হওয়ার কারণে, যা গন্ধযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন করে।
সাধারণত, আমরা যে খাবার খাই, তাতে থাকা শর্করা এবং স্টার্চ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ভেঙে গেলে গন্ধ উৎপন্ন হয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি মাড়ির রোগ বা দাঁত ক্ষয়ের মতো গুরুতর দাঁতের সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে। যদিও নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সেরা সমাধান হলো নিয়মিত ডেন্টাল চেক-আপ করানো। তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। জেনে নিন তেমনই ৫টি সহজ উপায়:
নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
১. লবঙ্গ: আমাদের রান্নাঘরের একটি অতি পরিচিত উপাদান হলো লবঙ্গ, যা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং মাড়ি ফোলা কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমায় এবং দাঁত থেকে রক্তপাত বা দাঁত ক্ষয়ের মতো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে মুখে কয়েকটি লবঙ্গ নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
২. পর্যাপ্ত জল পান: দিনে কম জল পান করলেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। জল মুখ থেকে ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে এবং এর বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে। এটি আপনার শ্বাসকে সতেজ রাখতেও সাহায্য করে। তাই যদি আপনার নিঃশ্বাসে প্রচুর গন্ধ অনুভব করেন, তবে দিনে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। নিঃশ্বাসের গন্ধকে আরও সতেজ করতে জলে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়েও নিতে পারেন।
৩. মধু এবং দারুচিনি: মধু এবং দারুচিনি উভয়েরই শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে এবং মাড়িকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। দাঁত এবং মাড়িতে নিয়মিত মধু ও দারুচিনির পেস্ট লাগালে দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং এমনকি নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের ঝুঁকিও কমে। এই দুটি উপাদানই নিরাপদ এবং রান্নাঘরে সহজেই পাওয়া যায়।
৪. দারুচিনি: মিষ্টি স্বাদের দারুচিনিও আপনাকে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে। লবঙ্গের মতো দারুচিনিতেও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে পারে। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য মুখে দারুচিনির একটি ছোট টুকরা রাখুন এবং তারপর ফেলে দিন। এতে মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে।
৫. লবণ-জলের গার্গল: হালকা গরম লবণ-জল দিয়ে গার্গল করলে তা মুখের খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং আপনার মুখকে সতেজ করে তুলতে পারে। লবণ-জল মুখের মধ্যে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে দূর করে। এক গ্লাস জলে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে বাইরে যাওয়ার আগে এটি দিয়ে গার্গল করুন।
