ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই সময় শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। আর ঘাম লোমকূপে জমে গিয়ে দেখা দেয় অসহ্য চুলকানি ও লালচে দানা, যা ঘামাচি নামেই পরিচিত। ঘামাচির যন্ত্রণায় বড় ছোট সকলেই নাজেহাল হয়ে পড়েন। তবে ভয়ের কিছু নেই, রান্নাঘরের কিছু সহজলভ্য উপকরণ দিয়েই এই discomfort থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন, জেনে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকটি ঘরোয়া সমাধান:
ছোলার ডাল: ঘামাচি কমাতে ছোলার ডাল বেশ কার্যকরী। রাতে সামান্য ছোলার ডাল জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে সেটি মিহি করে বেটে নিন। এই পেস্ট ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে আরাম পাবেন।
অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এর ঠান্ডা করার ক্ষমতাও রয়েছে। অ্যালোভেরার একটি ছোট টুকরো নিয়ে চারপাশের ধারালো অংশ কেটে ফেলুন। এরপর উপরের সবুজ খোসা সরিয়ে ভেতরের স্বচ্ছ জেল বের করে নিন। এই জেল সরাসরি ঘামাচির উপর ঘষে দিন। এটি ত্বকের জ্বালা ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করবে।
মুলতানি মাটি: ত্বক পরিচর্যায় মুলতানি মাটি বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঘামাচির সমস্যাতেও এটি দারুণ কাজ দেয়। চার চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও পরিমাণ মতো জল মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ঘামাচি আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আলু: আলু শুধু সবজি নয়, ঘামাচি কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। একটি আলু পাতলা পাতলা করে স্লাইস করে কেটে নিন। এবার আলুর স্লাইসগুলি ঘামাচির উপর হালকা করে ঘষুন। এটি ঘামাচি কমাতে এবং অস্বস্তিকর চুলকানি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।
বেকিং সোডা: বেকিং সোডাতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এটি ত্বক পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে। সামান্য বেকিং সোডার সঙ্গে জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। ঘামাচির উপর এই পেস্ট লাগিয়ে কয়েক মিনিট রেখে দিন। এরপর নরম কাপড় দিয়ে হালকা ঘষে ধুয়ে ফেলুন।
বরফ থেরাপি: বরফ ত্বকের জ্বালা ও চুলকানি কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে। একটি পাতলা সুতির কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে একটি পুঁটলি তৈরি করুন। এই বরফের পুঁটলি দিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে আলতো করে বুলিয়ে নিন এবং কিছুক্ষণ চেপে ধরুন। দিনে অন্তত ছয় ঘণ্টা অন্তর দুই-তিন দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
এই সহজ ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করে ভ্যাপসা গরমের ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তবে সমস্যা গুরুতর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।