হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে রান্নাঘর কেবল খাবার তৈরির জায়গা নয়, এটি দেবী অন্নপূর্ণার মন্দির। বিশ্বাস করা হয়, রান্নাঘরের পবিত্রতার ওপরই নির্ভর করে পরিবারের সুখ-সমৃদ্ধি। অনেকেই সময় বাঁচাতে রাতে আটা মেখে ফ্রিজে রেখে দেন এবং সকালে সেই বাসি আটা দিয়ে রুটি তৈরি করেন। কিন্তু শাস্ত্র ও জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এই একটি অভ্যাসই আপনার জীবনে চরম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
কেন বাসি আটা ‘তামসিক’ ও অশুভ? রাতে মেখে রাখা আটা সকালে বাসি হয়ে যায় এবং তাতে গাঁজন (Fermentation) প্রক্রিয়া শুরু হয়। শাস্ত্র মতে, এই বাসি আটা ‘তামসিক’ গুণযুক্ত। এই আটার রুটি খেলে শরীরে যা যা প্রভাব পড়ে:
-
শরীরে অলসতা ও ভারী ভাব জেঁকে বসে।
-
অকারণে রাগ, বিরক্তি এবং মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়।
-
ঘরে নেতিবাচক শক্তির প্রবেশ ঘটে, যা দেবী অন্নপূর্ণাকে অসন্তুষ্ট করে।
গ্রহের খেলা: সূর্য-মঙ্গল বনাম রাহু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, খাবারের সঙ্গে আমাদের ভাগ্য ও গ্রহের গভীর যোগ রয়েছে।
-
তাজা আটা (সূর্য ও মঙ্গল): তাজা আটার রুটি জীবনশক্তি ও সাহসের প্রতীক। এটি শরীরে ইতিবাচক প্রাণশক্তি জোগায় যা সূর্য ও মঙ্গলের শুভ প্রভাব বৃদ্ধি করে।
-
বাসি আটা (রাহু): বাসি আটাকে ছায়া গ্রহ রাহু-র সঙ্গে তুলনা করা হয়। রাহু মানেই বিভ্রান্তি, মানসিক অশান্তি এবং নেতিবাচক চিন্তা। বাসি আটার রুটি খেলে কুণ্ডলীতে রাহুর অশুভ প্রভাব বাড়তে থাকে।
ধর্মগ্রন্থের বিধান কী বলছে? ‘ধর্মসিন্ধু’, ‘নির্ণয়সিন্ধু’ এবং ‘স্মৃতি’ গ্রন্থে বাসি খাবার নিয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একটি শ্লোকে বলা হয়েছে:
“রাত্রৌ সন্ধ্যা সমায়ে চ য়াত ভুক্তম তাত বাসি ভবতি” অর্থাৎ, রাতে রাখা খাবার সকালের মধ্যেই বাসি ও ত্যাজ্য হয়ে যায়। তাই সুস্থ শরীর এবং পরিবারে লক্ষ্মীর কৃপা বজায় রাখতে প্রতিদিন তাজা আটা মেখে রুটি তৈরি করাই শাস্ত্রীয় বিধান।
সম্পাদকের টিপস: সমৃদ্ধি কেবল পরিশ্রমেই আসে না, তা আসে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পবিত্র জীবন যাপনেও। তাই আজই আপনার রান্নাঘর থেকে বিদায় দিন বাসি আটা রাখার অভ্যাস।