মানুষ সুন্দরের পূজারী, যেকোন সুন্দর জিনিস পেতে মানুষের মন ব্যকুল হয়। ফুল হচ্ছে মানুষের কাছে তেমনি ভালবাসা ও আকাঙ্ক্ষার বস্তু। মন ভালো করার জন্য ফুলের বাগানে ভ্রমণ অত্যন্ত সুখকর একটি বিষয়। ফুল এমন একটি বস্তু যা চোখের পলকেই বিষণ্ণ মনকে প্রফুল্ল করে দিতে পারে। সত্যি কথা বলতে একটি মানুষ মনের দিক দিয়ে যতই কঠোর হোক না কেন ফুল তার ভালো লাগবেই। কেননা, ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া কঠিন। সকল পুষ্প অনুরাগীদের উৎসর্গ করে বিশ্বের বিখ্যাত ৫টি ফুলের বাগান নিয়ে আমাদের এই আয়োজন যা আপনার মনকে ছুঁয়ে যাবে এবং অন্তরের গহীনে রেখে যাবে এক নিবিড় ভালো লাগার আবেশ। তাহলে চলুন আপাতত ছবি আর লেখনির মাধ্যমেই ঘুরে আসি বিশ্বের সুন্দরতম ফুলের বাগান থেকে!
দুবাই মিরাকল গার্ডেন
ফুল দিয়ে যে কত অবাক করা আর নজরকাড়া স্থাপনা তৈরি করা সম্ভব তা দুবাই মিরাকল গার্ডেন না দেখলে উপলব্ধি করা কঠিন। এটি ৭২০০০ হাজার মিটার জায়গা জুড়ে প্রায় ১০৯ মিলিয়ন ফুলের গাছে সমৃদ্ধ, যা ২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারীতে যাত্রা শুরু করে।
কোকেনহাফ বা কিচেন গার্ডেন
ইউরোপের সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান এবং এটি প্রায় ৭৯ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। অবাক করার মত তথ্য হলো, প্রতি বছর প্রায় ৭ মিলিয়নের মত ফুলের চারা এই বাগানে রোপন করা হয়। যা পরবর্তীতে রঙ্গিন ফুলের সৌন্দর্য্যে পর্যটকদের বিমোহিত করে রাখে।
কোয়াচি ফুজি গার্ডেন
এই বাগান মন মাতানো উইস্টেরিয়া ফুলের জন্য জনপ্রিয়। ফুটন্ত উইস্টেরিয়া ফুল দেখলে মনে হয় ঠিক যেন কোন দক্ষ শিল্পির রঙ তুলির আঁচরে ফুটে উঠা কোন ছবির দৃশ্য। তবে এই বাগানের সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হচ্ছে উইস্টেরিয়া ফুলে আবৃত দুটি টানেল, যার একটি ৮০ মিটার ও অন্যটি প্রায় ২২০ মিটার দৈর্ঘ্যের।
বাটচার্ট গার্ডেন
১৯০৪ সালে স্থাপিত বিশ্বের প্রাচীন ও সুন্দরতম ফুলের বাগানের মধ্যে বাটচার্ট গার্ডেন অন্যতম। প্রতি বছর মিলিয়নেরও বেশি দর্শনার্থীকে তার আকর্ষনে মুগ্ধ করে রাখে। দৃষ্টি নন্দন বাগানটি কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের রাজধানী ভিক্টোরিয়ার কাছে ব্রেন্টউড বে’র ভেনকুভের দ্বীপে প্রায় ৫৫ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। সমগ্র বাগানটি প্রায় ৩,০০,০০০ লাখ ফুল গাছে পরিপূর্ণ।
মনেট গার্ডেন
মনেট গার্ডেন ফ্রান্সের বিখ্যাত বাগানের একটি। দর্শনার্থীদের মন মাতাতে এই বাগান তার রুপ লাবণ্যে সর্বদায় এক ধাপ এগিয়ে এবং প্রতি বছর প্রায় ৫,০০,০০০ লাখ লোক এখানে ঘুরতে আসে। সুন্দর মনেট গার্ডেনটি মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত, যার একটি অংশ ক্লস নরম্যান্ড নামে ও অন্য অংশটি জাপানিজ শিল্পকলায় উজ্জীবিত হয়ে জলজ বাগান বা ওয়াটার গার্ডেন নামকরণ করা হয়েছে। প্রথম অংশের বাগানটি প্রায় এক হেক্টর জায়গায় বিভিন্ন রঙ ও জাতের টিউলিপ, অরিয়েন্টাল পপি, আইরিশ এবং আরো অনেক ফুলে সুরভিত। যা চিত্রশিল্পী মনেটের বর্ণিল ছবি আঁকায় অনেক রসদ যুগিয়েছে। আর জলজ বাগানে মনেটের বিখ্যাত চিত্রকর্মের আদলে একটি জাপানিজ ব্রিজের রেপ্লিকা রয়েছে যা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।
প্রিয় পাঠক, কেমন লাগলো পৃথিবীর বিখ্যাত ফুলের বাগান নিয়ে আমাদের এই আয়োজন? আশা করি আপনি সব গুলো বাগানের গল্প, ছবি আর তথ্য উপভোগ করেছেন। আপনার এই ভালো লাগার অনুভূতি আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। সেই সাথে চাইলে আপনার পছন্দের মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিঃসঙ্কোচে। আর যদি কখনো সময় সুযোগ হয় তবে অবশ্যই আপনার প্রিয় মানুষকে নিয়ে ঘুরে আসতে ভুল করবেন না।