কোলেস্টেরল আসলে মোমের মতো এক ধরনের ফ্যাটি পদার্থ, যা যকৃতে তৈরি হয়। লাইপোপ্রোটিনের মাধ্যমে এই কোলেস্টেরল শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাভাবিক অবস্থায় কোলেস্টেরল হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। তবে শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে এবং ফ্যাটের পরিমাণ অত্যাধিক বেড়ে গেলে, তা কোলেস্টেরলের সঙ্গে মিশে ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা এলডিএল তৈরি করে। তখনই এই কোলেস্টেরল শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকলে এবং শরীরচর্চা না করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।
কিন্তু কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে পায়ের কোন লক্ষণগুলি জানান দেবে? আসুন, জেনে নেওয়া যাক:
কোলেস্টেরলের মাত্রা যতক্ষণ না বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে, ততক্ষণ শরীরে তেমন কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না। এটাই এই রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই কারণেই নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করিয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রার উপর নজর রাখা অত্যাবশ্যক।
তবে, কোলেস্টেরল খুব বেশি বেড়ে গেলে তা পায়ের টেন্ডন ও লিগামেন্টগুলিতে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। পায়ের ধমনীগুলি সরু হয়ে গেলে পায়ের নীচের অংশে পর্যাপ্ত অক্সিজেনযুক্ত রক্ত পৌঁছাতে পারে না। এর ফলে পায়ে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
পা ভারী ও ক্লান্ত লাগা: সামান্য হাঁটলেই পা খুব ভারি ও ক্লান্ত মনে হতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরেও পায়ের ক্লান্তি সহজে দূর হতে চায় না।
পায়ের অসহ্য যন্ত্রণা: পায়ে অস্বাভাবিক যন্ত্রণা হতে পারে। এই ব্যথা উরু অথবা হাঁটুর নীচে পিছনের দিকে অনুভূত হতে পারে।
হাঁটার সময় ব্যথা বৃদ্ধি: এই ধরনের ব্যথা সাধারণত হাঁটার সময়েই বাড়ে। এমনকি অল্প দূরত্ব হাঁটলেও পায়ে তীব্র ব্যথা অনুভব হতে পারে। বিশ্রাম নিলে ব্যথা কিছুটা কম হতে পারে, কিন্তু হাঁটা শুরু করলেই তা আবার ফিরে আসে।
যদি আপনি এই লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তাহলে তা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির ইঙ্গিত হতে পারে। এমতাবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং রক্ত পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। উচ্চ কোলেস্টেরলের সময় মতো চিকিৎসা না করালে হৃদরোগ, স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই পায়ের এই লক্ষণগুলি অবহেলা না করে দ্রুত সাবধান হওয়া প্রয়োজন।