বর্তমান যুগে মেয়েরা বিয়ে এবং সন্তান ধারণের সিদ্ধান্ত বেশ ভাবনাচিন্তা করেই নিচ্ছেন। পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে করতে অনেক মেয়েরই বয়স ৩০ পেরিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে বিয়ের পর দু-এক বছর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সময় কাটিয়ে তারপর মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৩০ বা ৩৫ বছর বয়সের পর মা হতে চাইলে কিছু ঝুঁকির বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
দেরিতে মাতৃত্বের সম্ভাব্য ঝুঁকি
৩৫ বছরের পর সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত, সেগুলো হলো:
১. কমে যায় উর্বরতা: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের সন্তান ধারণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ডিম্বাণুর গুণগত মান এবং সংখ্যা উভয়ই হ্রাস পায়, যা গর্ভধারণকে কঠিন করে তোলে।
২. বাড়ে স্বাস্থ্যগত জটিলতা: ৩৫ বছরের পর গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রসব-পূর্ব রক্তক্ষরণ এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। এছাড়া, প্রসবকালীন জটিলতাও বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
৩. জন্মগত ত্রুটি: দেরিতে মা হলে জন্মগত ত্রুটিযুক্ত সন্তানের জন্মদানের আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। ডাউন সিনড্রোমের মতো ক্রোমোজোমাল অসঙ্গতির ঝুঁকিও বাড়ে।
৪. অপরিপক্ব শিশু ও সিজারিয়ান প্রসব: বিভিন্ন জটিলতার কারণে অপরিপক্ব শিশুর জন্মহার যেমন বেড়ে যায়, তেমনই স্বাভাবিক প্রসবের পরিবর্তে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্মহারও অনেকগুণ বেড়ে যায়।
৫. পরবর্তী সন্তান ধারণে বিরতিহীনতা: ত্রিশোর্ধ্ব বা পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে প্রথম সন্তান হলে সাধারণত দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার আগে যে দুই বা তিন বছর বিরতি দেওয়া প্রয়োজন, সে সুযোগটা অনেক সময় থাকে না। এতে শরীরের উপর অতিরিক্ত ধকল পড়তে পারে।
দেরিতে মা হতে চাইলে প্রস্তুতি
যদি পঁয়ত্রিশের পর মা হওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে ৩০ বছর বয়স থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। এর জন্য শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত চেকআপ এবং সুষম ডায়েটে থাকা জরুরি। প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েই গর্ভধারণ করা উচিত।