সুস্থ থাকতে প্রতিদিন আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এই পুষ্টিকর ফলের ভেতরেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর অন্যতম ভয়ঙ্কর বিষ ‘সায়ানাইড’ (Cyanide)। আপেল খাওয়া যতটা উপকারী, এর বীজ চিবিয়ে ফেলা ঠিক ততটাই বিপজ্জনক হতে পারে।
কেন বিষাক্ত আপেলের বীজ? আপেলের বীজে থাকে সায়ানোজেনিক যৌগ। বিজ্ঞানের ভাষায়, আপেলের বীজের ওপর একটি শক্ত আবরণ থাকে যা বিষকে আটকে রাখে। যদি আপনি আস্ত বীজ গিলে ফেলেন, তবে তা হজম হয় না এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, ফলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু বিপদ তখনই ঘটে যখন কেউ বীজটি চিবিয়ে বা কামড়ে খায়। বীজ চিবিয়ে ফেললে সেই আবরণ ভেঙে যায় এবং বিষাক্ত উপাদান নির্গত হয়ে সরাসরি রক্তে মিশে যায়।
কতগুলো বীজ খেলে মৃত্যু হতে পারে? বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণহানির ঝুঁকি নির্ভর করে শরীরের ওজনের ওপর।
-
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে: একজন ৭০ কেজি ওজনের মানুষের শরীরে সায়ানাইড মারাত্মক হতে কমপক্ষে ১৪৩টি আপেলের বীজ চিবিয়ে খেতে হবে। যা গড়ে প্রায় ১৮টি আপেল থেকে পাওয়া সম্ভব।
-
শিশুদের জন্য চরম ঝুঁকি: শিশুদের ওজন কম হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে সামান্য বিষক্রিয়াও বড় বিপদ ডেকে আনে। মাত্র ৪-৫টি আপেলের বীজ চিবিয়ে খেলে শিশুদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিষক্রিয়ার হাত থেকে বাঁচবেন কীভাবে? ১. বীজ ফেলে দিন: আপেল খাওয়ার আগে বা শিশুদের কেটে দেওয়ার সময় সবসময় বীজ এবং মাঝখানের শক্ত অংশটি সাবধানে ফেলে দিন। ২. অসতর্কতা এড়ান: ভুল করে একটি বা দুটি বীজ গিলে ফেললে আতঙ্কিত হবেন না, কারণ আমাদের শরীর সামান্য বিষ ডিটক্সিফাই করতে সক্ষম। তবে বীজ চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। ৩. জুস তৈরির সময় সতর্কতা: বাড়িতে আপেলের জুস করার সময় নিশ্চিত করুন যেন কোনো বীজ তাতে না মেশে।
সম্পাদকের শেষ কথা: ফল হিসেবে আপেল অতুলনীয়, কিন্তু অসতর্কতা আপনার প্রিয়জনের বড় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই বিশেষ করে শিশুদের আপেল দেওয়ার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।