পর্যাপ্ত জল পান করলে শরীর অনেক অসুখ থেকে মুক্ত থাকে, এমনটা আমরা সবাই জানি। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন আট গ্লাস জল পান করা যথেষ্ট। অনেকে এর থেকে বেশিও পান করে থাকেন। কিন্তু এরপরও তাদের সমস্যা কমে না। তাদের ত্বক, চুল কিংবা শরীরে জলর অভাবে সমস্যা দেখা যায়। আসলে কখন কতটুকু জল পান করা উচিত তা আমরা অনেকেই জানি না।
গরমকালে ফ্রিজের ঠান্ডা জল পান করে প্রাণ জুড়ানোর অভ্যাস আছে অনেকেরই। এতে সাময়িক প্রশান্তি মিললেও আসলে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই গরমে ঠান্ডা জল নয়, গরম জল পান করা ভালো। এর কারণ হলো, গরম জল পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা ঠান্ডা জল পান করলে পাওয়া যায় না।
প্রাকৃতিকভাবে বিশুদ্ধ রাখে
আমাদের শরীরে নানা রকম বিষাক্ত পদার্থ জমানোর জন্য অনেকটাই দায়ী আমাদের খাদ্যাভ্যাস। আমরা প্রায় সবাই অতিরিক্ত মশলাদার, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করি। আবার খাবার খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও মানি না। এসব কারণে শরীরে বিষাক্ত পদার্থের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর বাইরে দূষণ ও জীবনযাপনের নানা অনিয়ম তো রয়েছেই। যেসব ডিটক্স ড্রিংক উপকারী, তা তৈরি করে খাওয়ার সময় মেলে না অনেকেরই। তাই আপনি যদি চান শরীর বিষমুক্ত, সুস্থ থাকুক তবে গরম জল পানের অভ্যাস করুন। গরম জল পান করলে তা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়। এর ফলে ঘাম হয়। শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ ঘামের সঙ্গে বের হয়ে যায় অনেকটাই।
সাইনাসের সমস্যা দূর করে
গরমেও অনেকের গরম-ঠান্ডার কারণে সর্দি লেগে যেতে পারে। অনেকের আবার রয়েছে সাইনাসের সমস্যা। সর্দি-কাশি কিংবা ঠান্ডা লাগার সমস্যায় গরম জল উপকারী একথা জানেন নিশ্চয়ই। তাই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে গরম জল পান করুন। নিয়মিত গরম জল পান করলে তা জমে থাকা মিউকাস দূর করতে সাহায্য করে। এতে গলা ব্যথার মতো সমস্যাও দ্রুত ভালো হয়।
দ্রুত হজম হয়
হজমের সমস্যা হলে গরম জল পানের অভ্যাস করুন। প্রয়োজনীয় জল পান না করলে ক্ষুদ্রান্ত আমাদের শরীরের ভেতর থেকে জল শোষণ করে। এর ফলে দেখা দেয় জলশূন্যতা এবং হজমের নানা সমস্যা। এভাবে চলতে থাকলে দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা। তাই ঠান্ডা জলর বদলে গরম জল পান করুন। এটি পুরো হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে। তবে ফুটন্ত গরম জল পান করবেন না, হালকা গরম হলেই যথেষ্ট।
ওজন বৃদ্ধির ভয় নেই
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই গরম জল পানের অভ্যাস করেন। হালকা গরম জল শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার খাওয়ার আগে দুই গ্লাস হালকা গরম জল খেলে মেটাবলিজম রেট অন্তত ত্রিশ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শরীরে জমে থাকা বাড়তি মেদ দ্রুত ঝরে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেও হালকা গরম জল পান করলে উপকার পাওয়া যায়।