করোনার পর এবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এইচএমপিভি ভাইরাস: লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

করোনাভাইরাসের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (HMPV)। নতুন এই ভাইরাস করোনার মতো ততটা ভয়াবহ না হলেও এর লক্ষণগুলো অনেকটাই একইরকম। চিকিৎসকদের মতে, এই ভাইরাসে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, কিছু নিয়ম মেনে চললেই এইচএমপিভি সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।

এইচএমপিভি কী এবং কীভাবে ছড়ায়?
এইচএমপিভি একটি শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস, যা সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। এটি বিশেষত শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভাইরাস মূলত কোনো বস্তু স্পর্শ, সরাসরি সংস্পর্শ অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

সুরক্ষায় মেনে চলুন এই পদক্ষেপগুলো:
এই ভাইরাস থেকে নিজেকে এবং অন্যদের সুরক্ষিত রাখতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

১. হাত পরিষ্কার রাখা:
বাইরে থেকে আসার পর বা কোনো কিছু স্পর্শ করার পর কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ভালোমতো পরিষ্কার করুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে খাওয়ার আগে, মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করার আগে এবং জনসমাগমস্থল থেকে ফিরে হাত ধোবেন। যদি সাবান ও জল না থাকে, তাহলে অ্যালকোহলযুক্ত (কমপক্ষে ৬০%) স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

২. মাস্ক পরা:
বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং খেয়াল রাখবেন মাস্ক যেন নাক ও মুখ ভালো করে ঢাকা থাকে। হাঁচি বা কাশির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ঢাকুন এবং ব্যবহৃত টিস্যু সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিন।

৩. বস্তু বা জিনিস কম স্পর্শ করা:
দরজার হাতল, আলোর সুইচ, স্মার্টফোন এবং কিবোর্ডের মতো বারবার স্পর্শ করা জিনিসগুলো নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করুন। জনবহুল স্থানে সিঁড়ির রেলিং বা অন্যান্য বস্তু স্পর্শ না করাই ভালো। এছাড়া একাধিক ব্যক্তির স্পর্শ করা জিনিসও ব্যবহার না করাই উচিত।

৪. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন:
অসুস্থ ব্যক্তি বা আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে যাদের সর্দিকাশি জনিত সমস্যা আছে, তাদের জিনিসপত্র ব্যবহার না করা ভালো। এই সময়ে জনসমাগম এড়িয়ে চলা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

৫. অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকুন:
যদি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তাহলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে দূরে থাকুন এবং যদি আপনি নিজে অসুস্থ হন, তাহলে বাড়িতে বিশ্রাম নিন, পুষ্টিকর খাবার খান ও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৬. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
সবসময় সুস্থ জীবনধারা অনুসরণ করা উচিত। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত জল পান করা, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঘুম ঠিকমতো না হলে শরীরে সর্দি কাশির মতো নানা সমস্যা দেখা দেয় এবং ক্লান্তি অনুভব হয়।

৭. চিকিৎসকের পরামর্শ:
যদি আপনার বা পরিবারের কারও শ্বাসকষ্ট, উচ্চ জ্বর বা অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy