অনিদ্রায় ক্লান্ত? এই ৫ ঘরোয়া উপায়ে রাতে ঘুম হবে গভীর, শরীর থাকবে চাঙ্গা

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন সব মানুষের নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। একটা সময় শরীরকেও বিশ্রাম দিতে হয়। ঘুম মস্তিষ্ক ও শরীরকে পূর্ণ বিশ্রাম দেয়। দিনে ষোলো ঘণ্টা ঠিকমতো পরিশ্রম করার জন্য আট ঘণ্টার ঘুম যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, অনিদ্রার মতো কষ্ট যাঁদের আছে, তাঁরাই বুঝতে পারেন। ঘুম না হওয়ার এই সমস্যাকে বলে ইনসমনিয়া। ক্রমাগত কাজ করে যাওয়ার ফলে শরীরে অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট খরচা হয়। আর এই ঘাটতি পূরণের জন্য শরীরের ঘুমের প্রয়োজন হয়। প্রকৃতি আমাদের মস্তিষ্ক থেকে একটি রাসায়নিকের ক্ষরণ ঘটায়, যার নাম মেলাটোনিন। এই মেলাটোনিন শরীরে ঘুমের সাইকেল বা চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই মেলাটোনিন সব সময়ে তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু আলোর উপস্থিতিতে নষ্ট হয়ে যায়। তাই উজ্জ্বল আলোয় ঘুম পায় না। এখন অনেকেই দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপ বা মোবাইলে কাজ করেন, চোখের সামনে উজ্জ্বল আলো তাঁদের মেলাটোনিন নষ্ট করে ঘুমের সমস্যা তৈরি করে। আর তাই ভোর ৬ টা পর্যন্ত জেগে থেকে দুপুর ২টোয় ঘুম থেকে উঠলে ঘুমের সাইকেল চেঞ্জ হয়ে যায়। আপনিও একই সমস্যায় ভুগছেন? রাতে ঘুম হচ্ছে না? তাহলে অবশ্যই মেনে চলুন ঘরোয়া এই টোটকা

প্রাণায়ম করুন

প্রতিদিন ভোর ৬.৩০ মিনিটের মধ্যে ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। সকালের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফ্রেশ হয়ে প্রাণায়ম করুন ১৫ মিনিট। পদ্মাসনে বসুন। ভেতর খেতে ওম বলুন। চোখ বন্ধ করে ১৫ মিনিট করুন। চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিন। একবার শ্বাস ছাড়ুন। আবার শ্বাস নিন। এইভাবে টানা করতে পারলে সমস্যার সমাধান হবেই। শরীর, মন ভেতর থেকে শান্ত হবে।

মন্ত্র শুনুন

ভোরবেলা উঠে গায়ত্রী মন্ত্র চালিয়ে সূর্যপ্রণাম করুন। মন্ত্র শুনুন। এমনকী নিজেও উদাত্ত কন্ঠে তা পাঠ করুন। মন্ত্রের নিজস্ব ছন্দ আছে। যা আমাদের স্নায়ুর উত্তেজনা কমায়। একাগ্রতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে এনার্জিও বাড়ায়। মন্ত্রের ধ্বনি স্নায়ুকে উজ্জীবিত করে। যে কারণে জিম বা হাসপাতালে সকালে কিন্তু মিউজিক সিস্টেমে মন্ত্রই বাজানো হয়। আর এই মন্ত্র কানে শুনলে একাগ্রতা বাড়ে।

এক্সসারসাইজ

সকালে উঠে ফ্রি হ্যান্ড করে পছন্দের মিউজিক চালিয়ে দিন। এবার নাচতে থাকুন তালে তালে। ৬ মাস যদি রোজ ১৫০ মিনিট করে ওয়ার্ক আউট করেন তাহলে এই ঘুমের সমস্যা চিরতরে বিদায় নেবে। এমনকী ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি ইত্যাদি সমস্যাও অনেক কমে আসবে। নিজের মন ভালো থাকবে। বাড়বে আত্মবিশ্বাস।

যোগাভ্যাস

সকালে উঠে প্রতিদিন ৩০ মিনিট হলেও যোগাভ্যাস করতে পারলে ভালো। নিতান্তই সময় না পেলে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যের সময়ও করতে পারেন। স্ট্রেস কমবে যোগা করলে। এছাড়াও মোটিভেশন বাড়বে। কাজে মনযোগ আসবে। মন শান্ত হবে। রক্তচাপ থাকবে নিয়ন্ত্রণে। ভেতর খেতেই একটা feel good ব্যাপার আসে। প্রতিদিন ২০ মিনিটের যোগাভ্যাস নিজের রুটিনে ঢুকিয়ে নিন।

ম্যাসাজ

ঘুম না হলেই নানা রকম সমস্যা আসে। আর তাই বিশেষজ্ঞরা অনেক সময় ম্যাসাজের পরামর্শ দেন। সপ্তাহের মধ্যে কোনও একদিন পছন্দের স্পাতে গিয়ে ম্যাসাজ নিতে পারেন। এছাড়াও পছন্দের অয়েল দিয়ে বাড়িতেও বডি ম্যাসাজ করাতে পারেন। এতে স্নায়ু শিথিল হয়। ভালো ঘুম আসে।

ম্যাগনেসিয়াম

ম্যাগনেসিয়াম স্ট্রেস কমিয়ে স্নায়ুকে শিথিল করে। আর তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে ম্যাগনেসিয়াম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিন ৪০০ mg এর ম্যাগনেসিয়াম ট্যাবলেট খেতে পারেন ছেলেরা। আর মেয়েরা ৩০০ mg। এছাড়াও স্নানের জলে ম্যাগনেসিয়াম ফ্লেক্স মিশিয়ে স্নান করলেও ঘুম ভালো হয়। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে আধ বালতি গরম জলে ম্যাগনেসিয়াম সল্ট দিন। এবার ওর মধ্যে কিছুক্ষণ পা চুবিয়ে বসুন। সাবান দিয়ে পা ঘষে পরিষ্কার করে নিন। দেখবেন পা নরম হবে আর ঘুমও ভালো হবে।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy