দিন দিনে সন্তান বেয়াড়া হয়ে উঠছে। শুধু দুষ্টুমি আর দুষ্টুমি। পড়াশোনায় মোটেও মনযোগ নেই। স্কুলে পারফর্মেন্স তলানিতে ঠেকেছে। ক্লাস টিচারের অভিযোগ প্রতিদিন শুনতে শুনতে হয়রান -এমন অভিযোগ শোনা যায় অনেক বাবা-মায়ের মুখেই। আবার দেখা যায় অনেক চেষ্টা করেও পড়া মনে রাখতে পারছে না সন্তান। সে নিজেও বুঝতে পারছে না কেন ভুল হচ্ছে এত? অমনোযাগই কি এর জন্য শুধু দায়ী? না কি মনে রাখতে না পারাটাও একটা সমস্যা?
জেনে রাখুন, এমন সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে। আপনিও হয়তো সারা দিনের শেষে সন্তানের পড়াশোনার বিষয় নিয়ে ভাবতে বসলেই অমনযোগিতার কথাই হয়তো বার বার আপনার চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। শাসন করে, ভয় দেখিয়েও অমনোযোগের অসুখকে কব্জা করা যায় না। এর জন্য দরকার কিছু জরুরি কৌশল। দেখে নিন কোন কোন উপায়ে সন্তানের অমনোযাগিতা দূর করবেন :
► সন্তান কিছুটা বড় না হওয়া পর্যন্ত পড়তে বসলে তার সামনে থাকুন। এমন একটা সময় তার পড়ার জন্য বরাদ্দ করুন, যাতে অফিস সামলে সেই সময়টা আপনিও বাড়িতে থাকেন। সামনে থাকলে ওর ভুলে যাওয়ার কারণ, কোথায় ঘাটতি সে সব বোঝা অনেক সহজ হবে।
► শিশুর ক্ষেত্রে ছবি ও ব্লকের সাহায্য নিন। পড়ার বিষয়টা ছবি এঁকে, প্রয়োজনে আলাদা আলাদা রং ব্যবহার করে বোঝান। পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভিজ্যুয়াল কোনো দৃশ্যও খুব কাজে আসে। তাই ইতিহাস বা নাটক বোঝাতে বসলে সেই ঘটনার উপর নির্মাণ কোনো নাটক বা সিনেমার দৃশ্যও দেখাতে পারেন। এতে মনে থাকবে বেশি। তবে সাহিত্য নির্ভর হলে তবেই তা দেখাবেন। বইয়ের গল্প পরিবর্তন করা নাটক-সিনেমায় সে সময় আস্থা রাখবেন না।
► সন্তান যা পড়ছে, সেটা আপনাকে পাল্টা বোঝাতে বলুন। এটা করতে সক্ষম হলে বুঝবেন, পড়া বুঝতে বা মনে রাখতে তার আর সমস্যা হবে না।
► পড়া বুঝে লিখে ফেলতে বলুন একবার। লিখে ফেললে সহজেই মনে রাখতে পারবে।
► ইতিহাস বা সাহিত্য গল্পের ছলে বুঝিয়ে বলুন সন্তানকে। মনে রাখা যায় এমন কিছু কৌশল আছে। যেমন, কোনো কোনো সাল-তারিখ বা বানান, রসায়নের পর্যায় সারণী- এসব মনে রাখার সহজ কিছু কৌশলগত ফর্মুলা আছে। নেট থেকেও সে সব জানা যায়। নিজে তা এক জায়গায় করে সন্তানকে বুঝিয়ে দিলে তো ভালই, একান্ত তা না পারলে অন্য কারও সাহায্য নিন বা ওকেই বলুন নেট ঘেঁটে সে সব জোগাড় করে নিতে।
► শিশু একাগ্র না হলে তাকে একটানা পড়াবেন না। এতে সন্তানের মনঃসংযোগের ঘাটতি দেখা যায়। বরং পড়ার মাঝে মাঝে ওর পছন্দের কিছু করতে দিন। এতে আনন্দ পাবে, মন ভালো রেখে পড়লে মনে রাখতেও পারবে সহজে।
► পড়া পারলে এই কিনে দেব, ওই কিনে দেব এ সব লোভ দেখানো ছোট থেকেই বন্ধ করুন। এতে মনঃসংযোগ তো বাড়েই না, উল্টে ওর মধ্যে নিজের দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি দায়বদ্ধতা আসে না। যা করে, তা পুরস্কারের লোভে করে।