আধুনিক প্রজন্মের মধ্যে সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন, এটি সাধারণ সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর। তবে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-সিগারেট নিয়মিত সেবন করলে সিগারেটের চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। শুধু ধূমপায়ী নন, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন আশেপাশে থাকা ব্যক্তিরাও। অর্থাৎ, পরোক্ষ ধূমপানের বিপদও এতে কম নয়।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-র তথ্য অনুযায়ী, ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিন অত্যন্ত আসক্তি তৈরি করতে পারে। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, বিশেষত কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
ই-সিগারেট সেবনের ফলে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হল EVALI (E-cigarette or Vaping-associated Lung Injury), যা একটি গুরুতর শ্বাসকষ্টের রোগ এবং প্রাণঘাতীও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় ভারী ধাতু, উদ্বায়ী জৈব যৌগ (Volatile Organic Compounds) এবং কার্সিনোজেন-এর মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে। শ্বাস নেওয়ার সময় এই বিষাক্ত উপাদানগুলি সরাসরি ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এমনকি, এর ফলে ফুসফুস বিকলও হয়ে যেতে পারে।
শুধু ফুসফুসই নয়, ই-সিগারেট হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। নিকোটিন রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন উভয়ই বৃদ্ধি করে, যা হার্ট অ্যাটাক ও অন্যান্য হৃদরোগের সম্ভাবনাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, ই-সিগারেট সেবনের কারণে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে ধূমপায়ীদের মধ্যে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।
সুতরাং, ই-সিগারেটকে সিগারেটের নিরাপদ বিকল্প ভাবার কোনো কারণ নেই। বরং, এটি স্বাস্থ্যের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই, এই আধুনিক নেশা থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।