তীব্র গরমের প্রভাব শুধু বাইরের পরিবেশেই নয়, আমাদের শরীরেও পড়ে। এই সময় ডিহাইড্রেশনের কারণে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যায় ভোগেন। গরম বাড়লে মূলত হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তার সঙ্গে যোগ হয় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ। সব মিলিয়ে গ্রীষ্মকালে পেটের সমস্যা যেন লেগেই থাকে। আর গুরুপাক খাবার খেলে তো কথাই নেই! তখন মুঠো মুঠো ওষুধই একমাত্র ভরসা মনে হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা একটি সাধারণ ব্যাপার। তবে কয়েকটি সহজ কৌশল মেনে চললেই এই গরমেও সুস্থ থাকা সম্ভব।
১. পর্যাপ্ত জল পান করে হাইড্রেটেড থাকুন:
গরমকালে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়। এছাড়াও, বমি বা ডায়েরিয়া হলে শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এর ফলে দেহে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। তাই এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু পানীয় জল নয়, মাঝে মাঝে ওআরএস (Oral Rehydration Solution) বা ডাবের জলও খেতে পারেন, যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
২. খাদ্যতালিকায় রাখুন টক দই:
অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অপরিহার্য। টক দই অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এই গরমে ডায়রিয়ার সমস্যা মোকাবিলা করতে টক দই খুবই কার্যকর। এছাড়াও, এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে।
৩. চা-কফির পরিমাণ কমান:
দুগ্ধজাত খাবার এবং ক্যাফেইন – এই উভয় ধরনের খাবারই পাচনতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গরমকালে এই খাবারগুলো খেলে পেটে জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে। চা বা কফি একেবারে বাদ দিতে না চাইলে গ্রিন টি বা ব্ল্যাক টি পান করতে পারেন, তবে তাও অল্প পরিমাণে।
৪. সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন:
গরমকালে হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান। যে খাবারগুলি দ্রুত হজম হয়, সেগুলি খাওয়ার চেষ্টা করুন। নিরামিষ খাবার বেশি পরিমাণে খেতে পারেন। এতে হজম দ্রুত হবে। তবে শরীরে যাতে প্রোটিনের অভাব না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরি।
৫. প্রক্রিয়াজাত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন:
গরমকালে ভাজাভুজি, অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা উচিত। প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
এই সহজ কৌশলগুলি মেনে চললে গরমকালে পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং সুস্থ জীবনযাপন করা যায়। তাই, এই গ্রীষ্মে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিন।