রক্ত পরীক্ষায় কোলেস্টেরলের মাত্রা ধরা পড়লে তবেই নড়েচড়ে বসেন বেশিরভাগ মানুষ। তার আগে কেউই খুব একটা সচেতন নন কোলেস্টেরল নিয়ে। তাছাড়া কোলেস্টেরল নীরব ঘাতকের মতো বেড়ে চলে রক্তে। যদিও আজকাল লাইফস্টাইল ও লাগামহীন খাওয়া-দাওয়ার কারণেই এই কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দেয়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে গড়ে প্রতি বছর কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হন ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। তার মধ্যে আবার ৪০ শতাংশ মানুষ উচ্চ কোলেস্টেরলে রয়েছে। এই উচ্চ কোলেস্টেরল আবার হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। তাই আগে থাকতে সতর্ক হওয়া জরুরি। তবে উচ্চ কোলেস্টেরলের কিছু উপসর্গ শরীরেই ফুটে ওঠে। এই উপসর্গগুলির ব্যাপারে জানা থাকলে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎশা শুরু করতে সুবিধা হবে।
চোখ
উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে চোখের মধ্যে নানান ধরনের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। চোখের পাতার উপরের পৃষ্ঠে সাদা বা হলুদ রঙের হালকা দাগ দেখা যায়। এ ছাড়াও কোলেস্টেরলের আরও একটি উপসর্গ চোখের মণির চারপাশে সাদা গোল গোল দাগ। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে ‘কর্নিয়াল আর্কাস’ বলে। যদি বয়স ৫০ বছরের কম হয় এবং কেউ যদি কর্নিয়াল আর্কাসে আক্রান্ত হন, সে ক্ষেত্রে আপনার উচিত দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়ার লক্ষণ হতে পারে এটি।
পা
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে পায়ের ধমনীগুলি সরু হয়ে গেলে পায়ের নীচের অংশে অক্সিজেন-সহ রক্ত পৌঁছতে পারে না। তাতে পা ভারী হয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সহজেই। পায়ের অসম্ভব যন্ত্রণা হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। উরু বা পায়ের হাঁটুর নীচে পিছনের দিকে ব্যথা হতে পারে। হাঁটার সময়েই এই ধরনের ব্যথা বাড়ে। অল্প দূরত্ব হাঁটলেও এই ব্যথা হতে পারে। তাই এই লক্ষণগুলি দেখলেই উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।
কালশিটে
হঠাৎ করে যদি ত্বকে কালশিটের দাগ পড়তে শুরু করে তাহলে বুঝতে হবে কোলেস্টেরলের ওষুধ খাওয়ার সময় এসেছে। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে না। কালশিটে পরার কারণই হল কোলেস্টেরলের পুরু আস্তরণ। সেই জন্যই কালশিটে পড়ে।
পেশিতে টান ধরা
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে পেশিগুলিও স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ফেলে। যার ফলে শিরায় টান ধরে। অনেকেরই এই সমস্যাটি হয়। ঘন ঘন শিরায় টান ধরা ভাল লক্ষণ নয়। এমন হলে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। অজান্তেই শরীরে কোলেস্টেরল হানা দিয়েছে কি না, তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন।