একেক জনের খাদ্যাভাস একেকক রকম হতেই পারে। কিন্তু আমিষ থেকে শুধু মাত্র নিরামিষাসি হয়ে যাওয়ার সময় শরীরে যে কয়েকটি পরিবর্তন হয়, তা বলাই বাহুল্য। তেমনই কয়েকটি জেনে রাখা দরকার আগে থেকে।
১। ত্বকের পরিবর্তন : মিশ্র ডায়েট বা অমনিভোরাস ডায়েট থেকে নিরামিষ ডায়েটে গেলে প্রথমেই পরিবর্তন ধরা পড়বে ত্বকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু শরীরে ভিটামিনের পরিমাণ বাড়বে, তাই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে। সমস্ত নিরামিষাসিদেরই ত্বক উজ্জ্বল- এমনটা নয়। কিন্তু মিশ্র ডায়েটে থাকা অবস্থার চেয়ে নিরামিষ ডায়েটে পৌঁছলেই ত্বকের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।
২। স্বাদবদল মাছ আর রেড মিটে জিংক : এই জিংক টেস্টবাড বা স্বাদকোরক এবং শ্রবন ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিরামিষ খাবারে জিংক সেই পরিমাণে থাকে না। তাই এই দুটো ইন্দ্রিয়ের শক্তি একটু হলেও কমে। কিন্তু জিংক সাপ্লিমেন্ট নিয়ে তার মোকাবিলা করা যায়।
৩। শক্তি বাড়বে নিরামিষ খাবারে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরের শক্তির পরিমাণ বাড়বে। ক্লান্তিকে দূরে রাখা যাবে অনেক ক্ষণ। সারা দিন চনমনে থাকার প্রবণতা দেখা যাবে নিরামিষ ডায়েটে যাওয়ার পর থেকেই।
৪। ওজন কমবে প্রাণিজ প্রোটিন এবং চর্বির পরিমাণ শরীরে আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে নিরামিষ খাবার খেতে শুরু করার পর থেকেই। তাই এই ডায়েটে ঢুকে পড়লেই ওজন কমবে। এবং হজম ক্ষমতাও বাড়বে। সেই কারণে চর্বি জমবে কম।
৫। বদলাবে মলত্যাগের অভ্যাস অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই মিশ্র ডায়েট থেকে নিরামিষ ডায়েটে পরিবর্তন হলেই শরীরের খাদ্যতন্ত্রে বদল আসে। প্রথম প্রথম মলত্যাগের মধ্যে কোনও নিয়ম থাকে না। কোনও দিন কোষ্ঠে ভুগছেন, তো কোনও দিন পেটের গণ্ডগোল বেঁধে গেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীর এই খাবারে মানিয়ে নেবে। তখন আগের থেকে পেট আরও ভালো পরিষ্কার হবে। কারণ এই খাবারে ফাইব্রয়েডের পরিমাণ অনেক বেশি।
৬। পেশির পরিবর্তন প্রাণিজ প্রোটিন শরীরে আসা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে পেশির পরিবর্তন হয়। আগে আঘাত পেলে আপনার পেশি যত তাড়াতাড়ি সেরে উঠত, এখন সময় লাগবে তার চেয়ে বেশি। যাঁরা জিমে যান, বা ভারি ওজন নিয়ে একসারসাইজ করেন, বা ভারি বস্তু ওঠানো-নামানোর মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে নিরামিষ ডায়েটে পেশির আঘাত সারতে সময় নেবে বেশি। কারণ নিরামিষ ডায়েটে প্রোটিনের পরিমাণ কম, এবং পুরোটাই উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। তাই বাইরে থেকে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট দিতে হতে পারে।
৭। ক্যালসিয়ামের অভাব :যাঁরা নিরামিষাসি বা ভেজিটেরিয়ান তাঁধের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অতটা না হলেও, যারা ভেগান, তাঁদের ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক সমস্যা। কারণ তাঁরা দুধও খান না। সেক্ষেত্রে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘণত্ব কমে যায়। তবে সাপ্লিমেন্টে এর সমাধান করা যায়।
৮। হৃদযন্ত্রের উপকার : যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁদের কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা অনেক কম হয়- এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শরীরে উদ্ভিজ্জ পুষ্টিগুণের কারণে কমে যায় হৃদযন্ত্রের আশঙ্কা।