শরীরের গঠন সুন্দর আর মজবুত করে তুলতে, অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে অথবা শরীর সুস্থ রাখতে অনেকেই নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে এই শরীরচর্চার প্রতি আসক্তি অবসেশনের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। নিটোল, নির্মেদ শরীরের বাসনায় নানা পদ্ধতিতে ঘাম ঝরাতে শুরু করেন অনেকে। তখনই ঘটে বিপত্তি। তাই সাবধান হয়ে যান। কারণ, দেখা গিয়েছে অতিরিক্ত শরীরচর্চা সুফলের বদলে শরীরে নানা কুফল ঘটায়। ডেকে আনে নানা বিপদ।
কী কী বিপদ হতে পারে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
১. আমরা জানি, নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের পেশি গঠন ও মজবুত করে। কিন্তু অতিরিক্ত শরীরচর্চায় ঠিক উল্টোটা ঘটে। এতে শরীরের পেশি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
২. অতিরিক্ত শরীরচর্চায় হৃদযন্ত্রের পেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেখান থেকে হার্ট-অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
৩. শরীরচর্চার সময় অতিরিক্ত ওজন তোলার ফলে কোমর, হাঁটু, গোড়ালি বা কব্জির হাড়ে টান পড়ে। ফলে হাড়ে ক্ষয় ধরতে পারে।
৪. মাত্রাতিরিক্ত শরীরচর্চায় স্নায়ুতন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
৫. শরীরচর্চা অবসাদ কাটিয়ে মনকে ভাল করে তোলে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেভি এক্সারসাইজ মানসিক অবস্থায় বদল আনে। মন, মেজাজ খিটখিটে করে তোলে।
৬. সকাল বিকেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানোয় খাওয়া-দাওয়ার রুটিনে পরিবর্তন চলে আসে। অনেকে খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে দেন। এতে হিতে বিপরীত হয়। অপুষ্টি দেখা দেয়। শরীরকে আরও দুর্বল করে তোলে।
৭. অপুষ্টির ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে তখন একটুতেই কাহিল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
দেখা যাচ্ছে, নিয়মিত শরীরচর্চায় যা যা ভাল ফল মেলে, অতিরিক্ত শরীরচর্চায় সেগুলিরই ক্ষতি হয় বেশি। সম্প্রতি গবেষণাতেও দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্রতিদিন তিন ঘণ্টার বেশি সময় কোনও না কোনও ধরনের শরীরচর্চা করেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচদিন ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করেন তাঁরা অনেক বেশি ফিট থাকেন। এঁদের মানসিক অবস্থাও অনেক ভাল থাকে। তাই অবসেশন কাটিয়ে প্রকৃত শরীরচর্চায় মন দিন।