‘শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়’—এই ধারণা ভুল! ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোলে সুদে-আসলে মূল্য ফেরাবে শরীর

বর্তমানের কর্মব্যস্ত জীবনে নানা রোগভোগের জন্য জীবনযাপন ও জীবনশৈলিকেই দায়ী করা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্কের রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম অপরিহার্য হলেও, কাজের চাপ কিংবা মোবাইলে চোখ ডুবিয়ে অনেকে আজকাল ছয় ঘণ্টারও কম ঘুমাচ্ছেন। অনেকেই মনে করেন, শরীর সব সয়ে নেবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—শরীর এই অবহেলার মূল্য সুদে-আসলে ফিরিয়ে দেবে।

ইন্ডিয়া টুডে-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিকিৎসকরা বলছেন, রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোলে হার্ট, বিপাকক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সবই গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। কম ঘুম আমাদের শারীরিক এবং শারীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কাজকর্মের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

কম ঘুমের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি:

ঘুমের অভাবে প্রথম সমস্যা আসে মস্তিষ্কে। দীর্ঘদিন কম ঘুম হলে দেখা দিতে পারে:

ব্রেন ফগ (Brain Fog): চিন্তাভাবনার খেই হারিয়ে ফেলা বা কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে না পারা।

দুর্বল স্মৃতিশক্তি: স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা করে, অর্থাৎ সহজে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতা হ্রাস: স্মৃতিশক্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস পায়, কারণ মস্তিষ্ক দরকারি তথ্য একত্রিত করতে পারে না।

ইমোশনাল প্যারামিটার: আবেগের ভারসাম্য নষ্ট হয়। বিরক্তি ও উদ্বেগ বাড়ে।

বিপাক এবং হার্টের উপর প্রভাব:

মস্তিষ্কের পাশাপাশি ঘুমের অভাবের কারণে শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াও বিঘ্নিত হয়:

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বিপাকীয় ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়। এই ভারসাম্যহীনতা অতিরিক্ত খাওয়ার ঝোঁক বাড়ায়, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।

রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের ক্ষতি: ঘুমের অভাব শরীরে স্ট্রেস হরমোন তৈরি করে, যা উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারক। দীর্ঘ সময় ধরে কম ঘুম হলে হৃদযন্ত্রের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস: ঘুমের অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়, ফলে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

অতএব, সুস্থ থাকতে এবং শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে রাতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy