২৪ নভেম্বর, ভারতীয় চলচ্চিত্রের আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র নিভে গিয়েছিল। ৮৯ বছর বয়সে থেমেছিল কিংবদন্তী অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর জীবনযাত্রা। গোটা ইন্ডাস্ট্রি যখন শোকে স্তব্ধ, ঠিক সেই সময়ই সামনে এল এক আবেগঘন, কিন্তু এতদিন অজানা তথ্য। মৃত্যুর আগে ধর্মেন্দ্র দেখে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলে সানি দেওল অভিনীত বহুচর্চিত ছবি ‘লাহোর ১৯৪৭’।
৫৬তম আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসব (IFFI)-এর মঞ্চে উঠে এই তথ্য প্রকাশ করেন অভিনেতা ও প্রযোজক আমির খান। ধর্মেন্দ্রর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আমিরের গলাতেও ধরা পড়ে ব্যক্তিগত ক্ষতির যন্ত্রণা।
‘লাহোর ১৯৪৭’ ছিল ধর্মেন্দ্রর অন্যতম প্রিয় স্ক্রিপ্ট:
আমির খান জানান, ‘লাহোর ১৯৪৭’ ধর্মেন্দ্রর অন্যতম প্রিয় চিত্রনাট্য ছিল। আর ঠিক সেই কারণেই মুক্তি না পাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ছবিটি দেখাতে পারা আমিরের কাছে এক অমূল্য প্রাপ্তি।
আমির বলেন, “‘লাহোর ১৯৪৭’ নামের যে ছবিটা আমরা সানিকে নিয়ে বানিয়েছি, আমি ধর্মেন্দ্রজিকে দেখাতে পেরেছিলাম। ছবিটা এখনও মুক্তি পায়নি, কিন্তু তিনি দেখে গিয়েছেন। এটা আমার কাছে খুব বড় ব্যাপার। কারণ ছবির চিত্রনাট্যটা তিনি অসম্ভব পছন্দ করেছিলেন।”
আমির খানের প্রযোজনায় এবং রাজকুমার সন্তোষীর পরিচালনায় তৈরি এই ছবিটি আসগর ওয়াজাহতের কালজয়ী নাটক ‘যিস লাহোর নহি দেখা, ও জমাই নি’ অবলম্বনে নির্মিত। দেশভাগের সময় এক মুসলিম পরিবারের লক্ষ্ণৌ থেকে লাহোরে পাড়ি দেওয়া এবং মানবিক টানাপোড়েনই এই ছবির মূল বিষয়।
আমির-ধর্মেন্দ্রর শেষ এক বছরের ঘনিষ্ঠতা:
চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে আমির আরও জানান, ধর্মেন্দ্রর শেষ প্রার্থনাসভায় উপস্থিত থাকতে না পারার কষ্ট আজও তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তবে গত এক বছরে ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন আমির। জানান, শেষ এক বছরে সাত-আটবার ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন তিনি। এমনকি একদিন নিজের ছেলে আজাদকেও নিয়ে গিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে দেখা করতে।
আমির বলেন, “আজাদ তেমন ওঁর ছবি দেখেনি। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা একসঙ্গে কাটিয়ে ও বুঝেছে, ধর্মেন্দ্রজি শুধুই মহান অভিনেতা নন, তিনি ছিলেন অসাধারণ মানুষ।”
‘লাহোর ১৯৪৭’-এ সানি দেওল ও প্রীতি জিন্টার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন শাবানা আজমি, আলি ফজল ও করণ দেওল। ছবিটি এখনও মুক্তির অপেক্ষায়, কিন্তু ধর্মেন্দ্রর কাছে এটি রয়ে গেল তাঁর দেখা শেষ ছবি হিসেবে—এক আবেগঘন, নিঃশব্দ অধ্যায়।