‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’—রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায়ের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যের এই চিরন্তন প্রার্থনা থেকেই বোঝা যায়, সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগ কতটা মহৎ হতে পারে। টলিউড অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী (Sayak Chakraborty) সেই ত্যাগের মূল্য ফিরিয়ে দিতে মরিয়া। জীবনের কঠিন সময়ে মায়ের দুর্দিনের লড়াইয়ের সাক্ষী ছিলেন সায়ক ও তাঁর দাদা। এবার সেই মাকে ভালো রাখার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছেন অভিনেতা।
মায়ের জন্মদিনের আগে পুরনো স্মৃতি হাতড়ে এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন সায়ক, যেখানে তাঁর সংগ্রামের গল্প উঠে এসেছে।
ছোটবেলার স্বপ্ন এখন সত্যি
মায়ের সঙ্গে একটি জন্মদিনের ছবি শেয়ার করে সায়ক লিখেছেন:
“একটু একটু করে টাকা জমিয়ে তখন দুই ভাই মায়ের জন্য কেক কিনতাম, সোনারপুরে শাড়ির দোকান দেখে দাঁড়িয়ে ভাবতাম দাম নিশ্চই অনেক হবে…যখন আমি আরো বড় হব, তখন শাড়ি কিনবো মায়ের…”
অভিনেতার কথায়, ছোটবেলায় দেখা সেই স্বপ্নগুলো এখন একটু একটু করে সত্যি হয়েছে। আজ শাড়ির অভাব নেই, কারণ তিনি নিজেই শাড়ির দোকানের মুখ (ফেস)।
‘হারানো সব ফিরিয়ে দিয়েছি, এটা আমার গর্ব’
সায়ক এরপর তাঁর মায়ের অতীতের চরম লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লেখেন, এক সময় মাকে শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করে দিতে হয়েছিল।
“সোনা থেকে রুপো এমনকী, মায়ের গায়ের শেষ গয়না রুপোর প্রবালের আংটি সেটা অবধি মা বিক্রি করে দিয়েছিল। এখন গয়নার দোকানের ফেস আমি। মায়ের হারানো সব ফিরিয়ে দিয়েছি। এটা অহংকার নয় এটা আমার গর্ব।”
সায়ক দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, সৎ পথে থেকে, হিংসা-অহঙ্কারকে দূরে সরিয়ে পরিশ্রম করলে তার ফল একদিন না একদিন মিলবেই।
বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের সঙ্গে জন্মদিন পালন
আগামী ২৫ ডিসেম্বর মায়ের জন্মদিন। অভিনেতা জানিয়েছেন, মায়ের হারানো গয়না থেকে শাড়ি-বাড়ি সব ফিরিয়ে দেওয়ার পরে এবার তিনি আরও মহৎ কাজ করতে চলেছেন। তিনি লিখেছেন:
“এবার ভাবছি মায়ের জন্মদিনটা বাকি অনেক মায়ের সাথে কাটাব। যাদের ছেলেমেয়েরা ভুলে গিয়েছে তাঁদের মায়ের ত্যাগ।”
অভিনেতার এই বার্তা থেকে স্পষ্ট, যে সব মায়ের সন্তানেরা তাঁদের ভুলে গিয়েছেন এবং যারা বৃদ্ধাশ্রমে চোখের জল ফেলেন, সায়ক তাঁদের সঙ্গেই নিজের মায়ের জন্মদিন পালন করতে চান। একজন সন্তানের জন্য এর থেকে মহৎ কাজ আর কীইবা হতে পারে!