২৪ নভেম্বর ২০২৫-এ ৮৯ বছর বয়সে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণের পর মুম্বইয়ের পরে এবার নতুন দিল্লিতেও তাঁর জন্য প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হলো। ধর্মেন্দ্রর দ্বিতীয় স্ত্রী হেমা মালিনী তাঁর দুই মেয়ে এষা ও অহনা দেওলকে সঙ্গে নিয়ে ১১ ডিসেম্বর দিল্লির ডঃ আম্বেদকর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে এই সভার আয়োজন করেন। ধর্মেন্দ্রর কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন হেমা মালিনী, যা উপস্থিত সকলকে আপ্লুত করে তোলে।
ধর্মেন্দ্রর প্রার্থনা সভায় আবেগপ্রবণ হেমা মালিনী
উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে হেমা মালিনী তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আজকের এই প্রার্থনা সভায় আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাতে গিয়ে আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি। আমি কখনও ভাবিনি যে আমার জীবনে এমন একটা দিন আসবে, যখন আমাকে বিশেষ করে আমার ধর্মেন্দ্রজির জন্য এই প্রার্থনা সভা আয়োজন করতে হবে। গোটা বিশ্ব তাঁর চলে যাওয়ায় শোকাহত। কিন্তু আমার জন্য এটা একটা বিরাট ধাক্কা। এমন একটা সম্পর্ক, যা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল, তা আজ ভেঙে গেল।”
হেমা মালিনী ধর্মেন্দ্রর ব্যক্তিত্বের প্রশংসা করে বলেন, “ধর্মেন্দ্রজি কখনও নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা ভাবেননি। তিনি সারাজীবন মাটির কাছাকাছি ছিলেন। ধনী হোক বা গরীব, পরিচিত হোক বা অপরিচিত, তিনি সবাইকে ভালোবাসতেন। সকলের ইজ্জত করতেন এবং সকলকে সম্মান দিতেন। তিনি এমনই একজন মানুষ ছিলেন।”
৫৭ বছরের দীর্ঘ সম্পর্ক এবং অপূর্ণ ইচ্ছে
হেমা মালিনী তাঁর ভাষণে ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে তাঁর ৫৭ বছরের দীর্ঘ সম্পর্কের কথা বলেন। তিনি জানান, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর বেশিরভাগ কাজই তিনি ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে করার সুযোগ পান। তাঁরা ৪৫টি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন, যার মধ্যে ২৫টিই ছিল সুপারহিট। তিনি ধর্মেন্দ্রর ফিল্মি কেরিয়ার নিয়েও কথা বলেন এবং জানান যে তিনি ৩০০-র বেশি ছবিতে কাজ করেছেন।
হেমা মালিনীর মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধর্মেন্দ্রর ভেতরের কবিসত্তা প্রকাশ্যে আসে। তিনি বলেন, “উনি কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন। ওঁর কাছে একটা বিশেষ ক্ষমতা ছিল—যে কোনও পরিস্থিতি বা অনুষ্ঠানেই ওঁর কাছে শব্দ তৈরি থাকত। আমি ওঁকে বলেছিলাম যে ওঁর একটা বই লেখা উচিত, ভক্তরা এটা খুব পছন্দ করবে। তাই উনি এটা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলেন এবং সব পরিকল্পনা করছিলেন। সেই কাজটা অসমাপ্ত রয়ে গেল।”
শ্রদ্ধা জানাতে হাজির রাজনৈতিক মহল
দিল্লিতে আয়োজিত এই প্রার্থনা সভায় হেমা মালিনীর দুই মেয়ে এষা ও অহনা দেওল, এষার প্রাক্তন স্বামী ভরত তখতানি এবং অহনার স্বামী বৈভব ভোরাও উপস্থিত ছিলেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা সহ আরও অনেকে ধর্মেন্দ্রকে শ্রদ্ধা জানাতে এই প্রার্থনা সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন।