সেরা অভিনেতা সায়ন্তন, সেরা অভিনেত্রী শ্রীতমা! গাজার শিশুদের যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ নিয়ে তৈরি বাংলা ছবির আন্তর্জাতিক সাফল্য

রবার্তো রসোলিনির কালজয়ী ছবি ‘রোম ওপেন সিটি’ (Rome Open City)-এর ৮০ বছর পূর্তিতে তাকেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পরিচালক অঞ্জনাভ রায়। রসোলিনির ছবিটি ছিল যুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক সিনেমাটিক প্রতিবাদ, যা নিয়োরিয়ালিজম আন্দোলনের সূচনা করেছিল। সেই ঐতিহ্যকে বহন করে শ্রীতমা দে এবং সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘কল্পনগর: অ্যান্ড্রোপলিস’ (Kalpanagar: Andropolis) এবার বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি লাভ করল।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য: এই বাংলা ছবিটি একাধিক ‘নিউইয়র্ক মুভি অ্যাওয়ার্ডস’ জিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মোট ১২টি বিভাগে আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে সিনেমাটি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

সেরা পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি: ‘কল্পনগর: অ্যান্ড্রোপলিস’।

সেরা অভিনেত্রী: শ্রীতমা দে।

সেরা অভিনেতা: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়।

ছবির মূল ভাবনা ও বার্তা: ‘কল্পনগর: অ্যান্ড্রোপলিস’ মূল ভাবনায় গাজার শিশুদের ওপর চাপানো যুদ্ধের বিরুদ্ধে এক জোরদার সিনেমাটিক প্রতিবাদ। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে যে বিশ্বব্যাপী জেনোসাইডের (গণহত্যা) এই যুগে একজন চলচ্চিত্র পরিচালকের সামাজিক দায়িত্ব কী হওয়া উচিত।

নেপথ্য অনুপ্রেরণা: ছবির নেপথ্য যন্ত্রসংগীতে নিওরিয়ালিস্টিক ক্লাসিক ডি সিকার ‘বাইসাইকেল থিভস’ এবং কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’-র থিম মিউজিকের প্রভাব রয়েছে। এছাড়াও, সিনেমার যুদ্ধ-দৃশ্য তৈরি করতে এআই (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

কাহিনী প্রেক্ষাপট: ঐন্দ্রিলা, একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার, তার সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইন্ডি ফিল্ম ডিরেক্টর বোধির। ঐন্দ্রিলা, সিনেমার ছাত্রী হিসেবে বোধির জটিল হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে সিনেমা করার কারণ জানতে চায়। বোধির চরিত্রের মাধ্যমেই পরিচালক দেখিয়েছেন, কীভাবে একজন শিল্পীর প্রতিস্পর্ধী আওয়াজ এই যুগে খুবই জরুরি, নইলে একদিন হয়তো আজকের কলকাতা শহরও প্যালেস্তাইনের মতো জেনোসাইডের শিকার হতে পারে।

কুশীলব ও কলাকুশলী: ছবিটির পরিচালক, সিনেমাটোগ্রাফার, লেখক ও মিউজিকের দায়িত্ব সামলেছেন অঞ্জনাভ রায় নিজে। মুখ্যচরিত্রে শ্রীতমা দে এবং সায়ন্তন মুখোপাধ্যায় ছাড়াও রয়েছেন সুমি বোস চৌধুরী, বসুধা নন্দী, শ্বেতা মিত্র, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকে। ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ছিলেন প্রতীক ভট্টাচার্য এবং এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার ও প্রোডাকশন ডিজাইনের দায়িত্বে ছিলেন সুদক্ষিণা রক্ষিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy