‘ভাষা কোনো সীমাবদ্ধতা নয়!’ বাংলা ছবি সম্পাদনা করে নতুন দিগন্ত দেখালেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্পাদক, রহস্যের কেন্দ্রে মহাভারত

৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (KIFF) প্রদর্শিত হলো সঞ্জয় ঘোষ দস্তিদার পরিচালিত বাংলা ছবি ‘যোজনগন্ধা’। ৭৫ মিনিটের এই ছবিটি শুধু তার বিষয়বস্তুর জন্যই নয়, বরং এর সম্পাদনার নেপথ্যের গল্পেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ছবিটি সম্পাদনা করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কন্নড় সম্পাদক এমএন স্বামী, যিনি বাংলা ভাষা জানেন না।

এমএন স্বামী জানান, ভাষা কখনোই সীমাবদ্ধতা হতে পারে না। তিনি বলেন, “সিনেমার নিজস্ব একটা ভাষা আছে। সেটা বুঝলেই আর সমস্যা হয় না। যেটা দরকার, সেটা হল আর্টিস্টের পারফরম্যান্স, এক্সপ্রেশন, ক্যামেরা মুভিং আর মুভমেন্টটাকে বুঝে নেওয়া।” সম্পাদনার সময় তিনি পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেন, কোন অংশটি রাখা হবে এবং কোন অংশটি বাদ দেওয়া হবে।

পরিচালক সঞ্জয় ঘোষ দস্তিদার এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমি মনে করি আমাদের সিনেমার ভাষাটা আমাদের কথ্য ভাষার থেকে আলাদা।” দক্ষিণ ভারতে একটি অন্য ছবিতে কাজ করার সময় স্বামী স্যারের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরিচালক জানান, এমএন স্বামী জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেও, সেই কারণে তিনি এই ছবিটি সম্পাদনা করেননি। বরং, বাংলা ভাষা না জানা সত্ত্বেও তিনি রাজি হন, কারণ তিনি সবকিছু ‘এক্সপ্লোর’ করতে চান। পরিচালক আরও বলেন, “আমাদের ছবিতে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, সংস্কৃত সব ভাষাই আছে, কমিউনিকেট করার জন্য। সম্পাদক শুধু কাটেন না, জোড়েনও। নাহলে ছবি তৈরি হয় না।”

‘উবাচ’ নাট্যসংস্থার ভাবনায় তৈরি এই ছবি মহাভারতের ছায়ায় নারীর ক্ষমতায়নের গল্প বলে। ‘যা নেই ভারতে, তা নেই ভারতে’—অর্থাৎ মহাভারতে যা নেই, তা পুরো ভারতবর্ষেও নেই—এই তথ্য মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে ‘যোজনগন্ধা’। ছবিতে মহাভারতের ধীবরকন্যা সত্যবতীর ধীরে ধীরে ক্ষমতায় আসা এবং রাজরানির আসনে বসার কাহিনি বিভিন্ন ঘটনার অনুষঙ্গে উঠে এসেছে।

ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডলি বসু, মণীষা আদক, লোপামুদ্রা গুহ নিয়োগী, কাবেরি মুখোপাধ্যায়, পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়-এর মতো শিল্পীরা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy