বন্ধু ছাড়া প্রাণ বাঁচে না—আর সেই বন্ধুই যখন মাত্র ৬ বছরের বড় হয়ে দাদার থেকেও বেশি আপন হন, তখন তাঁর চলে যাওয়ায় হৃদয়ে নামে নীরবতার ঝড়। এমনই এক বিরহে কাতর হয়েছেন বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন। সোমবার প্রখ্যাত অভিনেতা ধর্মেন্দ্র প্রয়াত হলে, তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিলে পার্লের মহাশ্মশানে উপস্থিত হন ‘শোলে’-র ‘জয়’। প্রিয় বন্ধু ‘বীরু’-কে বিদায় জানানোর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের আবেগ প্রকাশ করেন বিগ বি।
সাত এবং আটের দশকে ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ একসঙ্গে বহু কালজয়ী সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যার মধ্যে রমেশ সিপ্পির ‘শোলে’ বন্ধুত্ব এবং ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে আইকন হয়ে রয়েছে।
অমিতাভের হৃদয়বিদারক বার্তা
সোমবার প্রয়াত ধর্মেন্দ্রকে স্মরণ করে অমিতাভ বচ্চন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আরও এক সাহসী দৈত্য আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। পিছনে রেখে গেলেন নৈঃশব্দের মধ্যে এক অসহ্য যন্ত্রণা।”
তিনি ধর্মেন্দ্রর মহানতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লেখেন, “মহানতার প্রতীক ধরমজি। কেবল তাঁর সুঠাম দৈহিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং তাঁর বিশাল হৃদয়ের জন্যও তিনি স্মরণীয়। তিনি পঞ্জাবের যে গ্রামের মাটি থেকে এসেছিলেন, সেই গ্রামের মাটির স্বাদ তিনি আজীবন নিজের সঙ্গে রেখেছিলেন। তাঁর গৌরবময় কর্মজীবনে তিনি সর্বদা সত্যের পথে হেঁটেছেন, ছিলেন অকপট, এবং তাঁর ভ্রাতৃত্ববোধ ছিল অটুট। সময়ের সঙ্গে সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলালেও তিনি বদলাননি এতটুকু। তাঁর হাসি, তাঁর আকর্ষণ এবং তাঁর উষ্ণতা তাঁর আশেপাশে থাকা সকলের কাছেই বিস্তৃত ছিল—এটি এক বিরল ঘটনা।”
অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র প্রথমবার একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেন ১৯৭৪ সালে ‘দোস্ত’ সিনেমায়। এরপর ১৯৭৫ সালের আইকনিক সিনেমা ‘চুপকে চুপকে’ এবং ‘শোলে’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেন। পরে ‘নসিব’, ‘রাম বলরাম’ এবং ‘হাম কৌন হ্যায়’-এর মতো ছবিতেও তাঁদের জুটি দেখা যায়। অবশেষে বন্ধুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে অমিতাভ লেখেন, “আমাদের চারপাশের বাতাস শূন্য হয়ে গিয়েছে। এ এমন এক শূন্যতা যা সর্বদা শূন্য থাকবে।”
অভিনেতা ধর্মেন্দ্র সোমবার সকালে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করার পর জুহুতে নিজের বাড়িতেই তিনি মারা যান। পবন হংস শ্মশানে প্রবীণ অভিনেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।