টলিউডের পরিচালক-ফেডারেশন দ্বন্দ্বে প্রথম মামলা দায়ের করে শিরোনামে এসেছিলেন বিদুলা ভট্টাচার্য (‘প্রেম আমার 2’, ‘গল্পের মায়াজাল’-এর পরিচালক)। ফেডারেশনের হস্তক্ষেপের কারণে স্বাধীন পরিচালকদের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে—এই অভিযোগ নিয়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন আরও ১৫ জন পরিচালক। যদিও এখন সুদেষ্ণা রায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকেই মামলা থেকে সরে এসেছেন। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন বিদুলা।
বাংলায় কাজ না পেয়ে এবার তিনি পাড়ি জমিয়েছেন দিল্লিতে, যেখানে তিনি একটি বড় বাজেটের হিন্দি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি পরিচালনা করছেন।
ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিদুলা ভট্টাচার্য জানান, “কলকাতাতেও আমি কাজ করব। কিন্তু খারাপ এটাই লাগে বাইরে থেকে ডাক পাই, নিজের শহরে নয়।” তিনি স্পষ্ট বলেন, তিনি বরাবরই ফেডারেশনের টেকনিশিয়ান নিয়ে কাজ করেছেন, কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী লোক নিয়েই কাজ করেছেন, বাজেটের কারণে অযথা বেশি লোক নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।
স্বাধীন পরিচালকদের সমস্যা:
বিদুলা তাঁর সমস্যার কথা বিস্তারিত বলেন, “আজ যদি একটা অল্প বাজেটের দু’জন মাত্র বা কম সংখ্যক অভিনেতা নিয়ে আমি একটা ছোট ফ্ল্যাটে শুট করি, তা হলে আমি অত টেকনিশিয়ানকে তো দাঁড়ানোরও জায়গা দিতে পারব না।” তাঁর মতো বেশিরভাগ স্বাধীন পরিচালকেরাই বড় প্রযোজক পান না। ফলে, প্রযোজক অত টেকনিশিয়ানের খরচ বহন করতে না পেরে পিছু হটেন। ফলে, কী হয় ছবিটাই আর বানানো হয় না।”
সিদ্ধান্তে অনড় বিদুলা:
অনেক প্রযোজনা সংস্থা আশ্বাস দিলেও এখন তারাও পিছু হটছে জানিয়ে বিদুলা বলেন, “আমি বরাবরের মতো আগামীদিনেও ফেডারেশনের টেকনিশিয়ান নিয়েই কাজ করব, নিশ্চয়ই করব, কিন্তু আমার প্রয়োজন অনুযায়ী লোক নিয়ে করব। অযথা অনেক লোক নিয়ে আমি কাজ করতে পারব না। শুরুর দিন থেকে এই একটা কথাই আমি বলে আসছি। আজও আমার এই একই সিদ্ধান্ত।”
তিনি জানান, তিনি দিল্লিতেও ফেডারেশনের টেকনিশিয়ান নিয়েই কাজ করছেন, যারা বাইরে গিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, ফেডারেশনের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হওয়ার পর পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি ফেডারেশনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার কথা জানালেও, বিদুলা তাঁর সিদ্ধান্তে এখনও অনড়। তিনি বলেন, “আমি সরব না আমার সিদ্ধান্ত থেকে। আমি তো কাজ পাচ্ছি। বাইরে কাজ করারও সুযোগ পাচ্ছি। আমি আমার জায়গায় অনড়।”
তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, কাজের লোক কমাতে না পারলেও ফেডারেশন ছবি মুক্তি আটকে দিতে পারে, ঠিক যেমনটা তাঁর ছবি ‘দি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’-এর ক্ষেত্রে হয়েছিল।