সুচিত্রা সেন—এক নামেই বাংলা সিনেমার ইতিহাস। তাঁর অভিনীত ‘সপ্তপদী’ ছবির সেই সংলাপ—”অভিনয় করার সময় ও যেন আমাকে টাচ না করে”—আজও বাংলা দর্শক ভুলতে পারেনি। মহানায়িকা তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নিয়ে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করে ইউএসপি তৈরি করা তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ ছিল। তবে, চিত্রনাট্য অনুযায়ী একান্ত প্রয়োজন হলে তিনি শর্ত ভাঙতেন।
এমনই প্রোটোকল মেনে চলা সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দুঃসাহসিক কাজ করেছিলেন মুম্বইয়ের সুদর্শন অভিনেতা ধর্মেন্দ্র, যা সেটে বড়সড় ঝড় তুলেছিল।
‘মমতা’ ছবির সেটে যা ঘটেছিল:
১৯৬৬ সালে বাঙালি পরিচালক অসিত সেনের নির্দেশনায় তৈরি হয়েছিল হিন্দি ছবি ‘মমতা’। এটি ছিল বাংলা ব্লকবাস্টার ছবি ‘উত্তর ফাল্গুনী’-র হিন্দি রিমেক। ছবিতে মা (দিব্যানী) এবং মেয়ে (সুপর্ণা) দুই চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন। মেয়ে সুপর্ণার প্রেমিক ইন্দ্রনীলের চরিত্রে ছিলেন ধর্মেন্দ্র।
একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে ধর্মেন্দ্র নিজেই সেই আলোচিত ঘটনার কথা বলেছিলেন। তিনি স্বীকার করেন যে ‘দেবদাস’ ছবিতে দেখার পর থেকেই তিনি সুচিত্রা সেনের প্রতি দুর্বল ছিলেন।
দার্জিলিংয়ের আউটডোরে ‘মমতা’ ছবির একটি রোম্যান্টিক গানের দৃশ্যের শুটিং চলছিল। ধর্মেন্দ্র বলেন, “রোম্যান্টিক গানের দৃশ্যে শুটিং করছিলাম আমি এবং সুচিত্রা সেন। হঠাৎই তাঁর পিঠে একটি চুমু খেয়েছিলাম আমি। বাবারে যা রাগ করেছিলেন সুচিত্রা। আজও আমি ভুলতে পারি না।”
সুচিত্রার তীব্র অসন্তোষ:
ধর্মেন্দ্রর এই অপ্রত্যাশিত আচরণে সকলের সামনে চরমভাবে অসম্মানিত বোধ করেছিলেন মহানায়িকা। তিনি প্রচণ্ড অসন্তুষ্ট হয়ে ধর্মেন্দ্রকে বলেছিলেন, “আমাকে না বলে, আমার সঙ্গে আলোচনা না করে এটা আপনি কী করলেন ধর্মেন্দ্রবাবু।”
সুচিত্রার সেই ক্ষুব্ধ মূর্তি দেখে সানি-ববির বাবা ভীষণ লজ্জিত হন এবং মহানায়িকার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। শেষমেশ ‘মমতা’ ছবির গানের দৃশ্য থেকে সেই চুমুর অংশটি ফেলে দেওয়া হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেই সময়ের খবরের কাগজে এই ঘটনা ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছিল।