দীর্ঘ অপেক্ষাও তুচ্ছ! কিউবার ছবি দেখতে ভোর থেকে নন্দনে ভিড়, তবুও ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ক্ষোভ তরুণ প্রজন্মের

বাতাসে শীতের হালকা পরশ আর অন্যদিকে সিনেমার উষ্ণতা—এই সপ্তাহটি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে (KIFF) ঘিরে সিনেপ্রেমীরা নিজেদের সেঁকে নেন। বাংলা-হিন্দি ছবি ছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ভাষার ছবি এক ছাদের তলায় দেখার এই সুযোগ কলকাতার মানুষ সহজে ছাড়তে চান না। দেখতে দেখতে এই উৎসব পা দিয়েছে ৩১ বছরে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ছবির প্রদর্শন, আর ঠিক তখন থেকেই নন্দন চত্বরে শুরু হয়েছে সিনেপ্রেমীদের আনাগোনা। অন্যান্য কেন্দ্রে ছবি দেখানো হলেও, উৎসবের মূল আমেজ নিতে নন্দনে ভিড় বরাবরই বেশি, এবারও তার অন্যথা হয়নি।

সকাল থেকে ছবি দেখার জন্য লম্বা লাইন। কিউবার সিনেমা দেখতে আসা এক দর্শক বলেন, “দুটো সিনেমা পরপর বড় ছিল। তাই সময়টা পিছিয়ে গিয়েছে। অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেকক্ষণ। তবে, ছবি না দেখে ফিরব না।” অন্য এক সিনেপ্রেমী জানালেন, “প্রত্যেক বছরই আসা হয়। বিশেষ করে বেঙ্গলি প্যানোরমার ছবিগুলো দেখার ইচ্ছা আছে।”

আরেক অভিজ্ঞ দর্শক তাঁর আবেগের কথা প্রকাশ করে বলেন, “এই দিনগুলোর জন্য একটু এক্সাইটেড তো থাকিই। বছরে একবার সারা পৃথিবীর ছবি এক জায়গায় বসে দেখতে পাই। বিদেশি সিনেমার এই নেশা যাঁদের নেই, তাঁরা বুঝতে পারবেন না।” তিনি সাবটাইটেল ছাড়া বিদেশি ছবি দেখার চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেন—”একটা দৃশ্য মিস করলেই আর পরেরটা বুঝতে পারব না। তাও দেখি বিদেশি ছবি, বিদেশি কালচারকে জানতে।”

তবে তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠে সামান্য ক্ষোভের সুরও শোনা যায়। কিউবার ছবি দেখতে আসা এক যুবক বলেন, “দুপুর ২টোয় শো। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে, তাও দাঁড়িয়ে আছি। কখন শুরু হবে বুঝতে পারছি না। জানি না কীরকম ম্যানেজমেন্ট। এরা মনে হয় শো টাইমগুলো দেখে না, কারণ ১১টার শো এখনও শেষ হয়নি।”

যদিও, বড় কোনও উৎসবের আয়োজনে এমন টুকটাক ত্রুটি বা ব্যবস্থাপনার খামতি নজরে আসা স্বাভাবিক। তবে সেই সবকিছুকে তোয়াক্কা না করেই কলকাতার মানুষের রক্তে সিনেমার যে গভীর আবেগ, তা কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বারবার জীবন্ত হয়ে ওঠে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy