‘আমি যথেষ্ট নই!’ পর্দার আত্মবিশ্বাসী শেফালি শাহ ভোগেন এক বিরল মানসিক রোগে, কী এই ‘ইমপোস্টার সিনড্রোম’?

অভিনেত্রী শেফালি শাহ-এর পর্দায় দাপুটে এবং নিখুঁত অভিনয় দেখে মনে হয় তাঁর মনে বুঝি কোনো দ্বিধা বা ভীতি নেই। ‘দিল ধড়কনে দো’ এবং ‘দিল্লি ক্রাইম’-এর মতো কাজের মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যেই জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। অথচ, পর্দার পিছনে বাস্তবের দুনিয়ায় তাঁর মন সম্পূর্ণ ভিন্ন। মনের গভীরে অদ্ভুত সব ভাবনা, সন্দেহ এবং আত্ম-সংশয় ঘুরে বেড়ায়, যা তাঁকে তাঁর নিজের সাফল্যকেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে দেয় না।

চিকিৎসকদের মতে, শেফালি শাহের এই সমস্যাটি ‘ইমপোস্টার সিনড্রোম’ (Imposter Syndrome)-এর লক্ষণ হতে পারে।

কী এই ‘ইমপোস্টার সিনড্রোম’?
ইমপোস্টার সিনড্রোম হলো মূলত একটি মানসিক বা মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা, যেখানে ব্যক্তি নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা এবং অর্জনকে সহজে বা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না।

স্বীকৃতিতে অনীহা: যাঁরা এই সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা নিয়মিত মনে করেন যে তাঁদের কাজ যথেষ্ট নয়, তাঁরা প্রকৃত অর্থে সফল নন, অথবা যা কিছু অর্জন করেছেন তা কেবল ভাগ্য বা অন্যান্য বাহ্যিক কারণে সম্ভব হয়েছে।

সন্দেহ: ব্যক্তি মনে করেন, তিনি হয়তো অন্যদের চোখে ধুলো দিচ্ছেন এবং যে কোনো সময় তাঁর আসল ‘অযোগ্যতা’ ধরা পড়ে যাবে।

শেফালি শাহের অভিজ্ঞতা
শেফালি শাহের মতো জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেও এই সিনড্রোমের প্রভাব দেখা যায়।

তিনি প্রতিটি নতুন কাজ শুরু করার সময় নিজের সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান থাকেন।

তাঁর কাছে কোনো কাজ কখনও সহজ বা স্বাভাবিক মনে হয় না।

কাজ শেষ করার পরও তাঁর মনে তৃপ্তি আসে না, তখনও তাঁর মনে হয় যেন ‘এখনও অনেক কিছুই করা হয়নি’।

এই ধরনের অভিজ্ঞতা যেকোনো পেশাজীবী ব্যক্তির জন্য অতিরিক্ত চাপের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন সেই ব্যক্তি জনসাধারণের সামনে ক্রমাগত যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।

ইমপোস্টার সিনড্রোমের প্রভাব
ইমপোস্টার সিনড্রোমে ভোগা মানুষজন নিজেকে অতিরিক্ত সমালোচনামূলক এবং খুঁতখুঁতে মনে করেন।

তাঁরা নিজের অর্জনকে প্রায়শই অবমূল্যায়ন করেন।

বাইরে থেকে সুন্দর দেখালেও মনের মধ্যে একধরনের মানসিক চাপ চলতে থাকে, যা দিনের পর দিন কাজের মান, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং সাধারণ আত্মবিশ্বাসকে প্রভাবিত করে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, এই সমস্যা পেশাগত জীবনে বড় প্রভাব ফেলে। এটি কাজ করতে গিয়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম বা নিখুঁততা অর্জনের চেষ্টা করতে বাধ্য করে, যা মানসিক ও শারীরিক উভয় দিকেই চাপ তৈরি করে।

অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও জটিল হতে পারে। শেফালি শাহের ভেতরের এই সন্দেহ হয়তো তাঁর কাজের প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীল এবং নিবেদিতপ্রাণ করে তোলে, যার ফলস্বরূপ পর্দায় তাঁর দাপুটে অভিনয় ফুটে ওঠে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy