ব্যস্ত রাজধানী শহর। চারদিকে আকাশছোঁয়া অট্টালিকা আর শপিং মলের ভিড়। সাধারণ মানুষের ব্যস্ত আনাগোনা। কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি, তাঁদের পায়ের কয়েক ফুট নীচেই গত আট দশক ধরে লুকিয়ে রয়েছে সাক্ষাৎ যম! সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে একটি বহুতল নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়তেই হাড়হিম করা এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন নির্মাণকর্মীরা। মাটির তলা থেকে উদ্ধার হল ৪৭০ কেজি ওজনের এক বিশালাকায় জ্যান্ত বোমা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবিনাশী স্মৃতি পুলিশ ও বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালে নিক্ষেপ করা একটি মার্কিন এএন-এম৪৪ (AN-M44) বোমা। মিত্রশক্তির বিমান থেকে হামলা চালানোর সময় এটি শহরের এই ব্যস্ত এলাকায় পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু কোনও এক রহস্যময় কারণে তখন সেটি ফাটেনি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর মাটির আস্তরণ পড়ে যায় এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে টানা ৮০ বছর সেটি ওভাবেই সুপ্ত অবস্থায় ছিল।
আতঙ্কে খালি করা হলো শহর নির্মাণস্থলে বোমাটি নজরে আসতেই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বোমা ডিসপোজাল স্কোয়াডকে। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে প্রশাসনের তরফে তড়িঘড়ি গোটা এলাকা সিল করে দেওয়া হয়। আশপাশের বিশাল বিশাল আবাসন ও ব্যস্ত শপিং মল থেকে কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় অতি সন্তর্পণে মাটি থেকে বার করে আনা হয় সেই ৪৭০ কেজির দানবকে।
অবশেষে বিশেষজ্ঞ দল বোমাটিকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে শহর থেকে বহুদূরে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়েছে। সেখানেই সেটিকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হবে। এই ঘটনা ফের একবার মনে করিয়ে দিল, বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেমে গেলেও তার বিষবাষ্প আজও পৃথিবীর মাটির গভীরে কতটা জীবন্ত।