নেশামুক্তি কেন্দ্র নাকি কসাইখানা? হালিশহরে কালনার যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ, ঘনিচ্ছে রহস্য

নেশার অন্ধকার জগত থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার স্বপ্ন নিয়ে নেশামুক্তি কেন্দ্রে গিয়েছিলেন কালনার যুবক বিশ্বজিৎ মণ্ডল। কিন্তু সেই রিহ্যাব সেন্টারই তাঁর জন্য মৃত্যুপাশ হয়ে দাঁড়াল। উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত যুবক পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ আগস্ট বিশ্বজিৎকে হালিশহরের ওই বেসরকারি নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হত রিহ্যাব কর্তৃপক্ষকে। দীর্ঘ চার মাস সব ঠিকঠাক চললেও, গত ২৫ ডিসেম্বর হঠাৎ কেন্দ্র থেকে ফোন আসে পরিবারের কাছে। জানানো হয়, বিশ্বজিৎ গুরুতর অসুস্থ এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল চত্বরে লুকোচুরি ও দেহ উদ্ধার: খবর পেয়েই কালনা থেকে বিশ্বজিতের পরিজনরা দ্রুত সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পৌঁছান। কিন্তু সেখানে দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর হদিশ পাওয়া যায়নি। এরপরই পরিবারের সন্দেহ বাড়ে এবং তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশের সাহায্যেই তাঁরা জানতে পারেন যে বিশ্বজিৎ মারা গিয়েছেন। অভিযোগ, মৃত্যুর খবর জানার পর রিহ্যাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সংস্থার কর্মীরাও এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে বলে দাবি পরিবারের।

পিটিয়ে খুনের অভিযোগ: মৃতের পরিবারের দাবি, বিশ্বজিৎকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন থাকতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। সুস্থ করার নাম করে কেন প্রাণ কেড়ে নেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন তুলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই হালিশহর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট হবে। এই ঘটনায় রিহ্যাব কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও নজরদারি নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy