নিরাপদ মনে করে সহকর্মীদের গাড়িতে লিফট নিয়েছিলেন এক তথ্য-প্রযুক্তি (IT) সংস্থার মহিলা ম্যানেজার। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তই যে তাঁর জীবনে চরম দুঃস্বপ্ন হয়ে নেমে আসবে, তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। অফিস পার্টির পর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে চলন্ত গাড়িতে ওই মহিলাকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল খোদ সংস্থার সিইও এবং এক মহিলা এগজিকিউটিভের স্বামীর বিরুদ্ধে। রাজস্থানের উদয়পুরের এই নৃশংস ঘটনায় শিউরে উঠছে গোটা দেশ।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ ডিসেম্বর রাতে উদয়পুরের একটি হোটেলে অফিস পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রাত ৯টা নাগাদ পৌঁছেছিলেন ওই তরুণী ম্যানেজার। রাত দেড়টা নাগাদ পার্টি শেষ হলে তিনি বাড়ি ফেরার জন্য বের হন। সেই সময় সংস্থার সিইও জয়েশ, এক মহিলা এগজিকিউটিভ শিল্পা এবং শিল্পার স্বামী গৌরব তাঁকে নিজেদের গাড়িতে লিফট দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরিচিত সহকর্মী ও সিইও সঙ্গে থাকায় কোনো সন্দেহ না করেই ওই তরুণী তাঁদের গাড়িতে ওঠেন।
মাদক খাইয়ে নারকীয় অত্যাচার: নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে অভিযুক্তরা নেশার দ্রব্য বা মাদক মিশ্রিত সিগারেট কেনেন। জোর করে তা ওই তরুণীকেও দেওয়া হয়। ধূমপান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তরুণীর অভিযোগ, আংশিক জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন গাড়ির ভেতরেই সিইও জয়েশ তাঁকে যৌন হেনস্থা করছেন। এরপর অভিযুক্ত গৌরভও তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ভোর ৫টা নাগাদ তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা।
সম্পূর্ণ জ্ঞান ফেরার পর ওই তরুণী দেখতে পান, তাঁর শরীরের অন্তর্বাস, মোজা এবং কানের দুল গায়েব। এমনকি তাঁর গোপনাঙ্গে গুরুতর আঘাতের চিহ্নও লক্ষ্য করেন তিনি। পরদিন সকালেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।
পুলিশি পদক্ষেপ: উদয়পুরের পুলিশ সুপার যোগেশ গয়াল জানিয়েছেন, নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্ত সিইও জয়েশ, এগজিকিউটিভ শিল্পা ও তাঁর স্বামী গৌরবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাড়ির ভেতরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ড্যাশক্যামের ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও মাদক প্রয়োগ করে শ্লীলতাহানির ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
